চৌরাস্তায় মঞ্চের উদ্বোধনে জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। নিজস্ব চিত্র।
বরাবর-ই দার্জিলিঙের চৌরাস্তা পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা। সেই চৌরাস্তার আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেবে আধুনিক মুক্তমঞ্চ। এমনই আশা জিটিএ কর্তৃপক্ষের। সোমবার দার্জিলিং চৌরাস্তায় মুক্তমঞ্চের উদ্বোধন হয়েছে। স্থানীয় থেকে বাইরের কোনও গোষ্ঠী, এমনকী পর্যটকেরাও আগে থেকে অনুমতি নিয়ে মুক্তমঞ্চ ব্যবহার করতে পারবেন বলে জিটিএ-র তরফে জানানো হয়েছে।
চৌরাস্তার একপাশে একটি স্থায়ী মঞ্চ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই ছোট বলে বিভিন্ন সংগঠন আক্ষেপও জানিয়েছিল। সাধারণ নাচগানের অনুষ্ঠান করতে হলেও সেই মঞ্চকে অস্থায়ী কাঠামো দিয়ে বাড়াতে হতো। এ দিন উদ্বোধন হওয়া মুক্তমঞ্চের আয়তন প্রায় ১৫ হাজার বর্গ ফুট। মঞ্চের চারপাশে ধাতব স্তম্ভ রয়েছে। ওই স্তম্ভগুলিতে আলো বা শব্দের সরঞ্জাম যেমন লাগানো যাবে তেমনই সাজানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে। তবে পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকে খেয়াল রেখে অনুষ্ঠান না থাকলে স্তম্ভগুলিকে খুলে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। পর্যটকদের দল ঘরোয়া কোনও অনুষ্ঠান করতে চাইলেও সহজেই ওই মঞ্চ ব্যবহার করতে পারবেন বলে এ দিনের অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
জিটিএ-র চিফ বিমল গুরুঙ্গ মুক্ত মঞ্চের উদ্বোধন করলেও, তিনি অনুষ্ঠানে কোনও বক্তব্য রাখেননি। জিটিএ-র নির্বাহী অধিকর্তা সোনম ভূটিয়া বলেন “মুক্তমঞ্চকে দার্জিলিঙের পুজো উপহার বলা যেতে পারে। শৌচাগার-সহ বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেগুলিও দ্রুত সেরে ফেলা হবে। যে কেউ মুক্তমঞ্চ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কী শর্তে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বৈঠক করে সে বিষয়গুলি ঠিক করে নেওয়া হবে।”
২০১২ সালে মুক্তমঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। মঞ্চ তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। জিটিএ-র পর্যটন দফতর মঞ্চের দেখভাল করবে এবং ব্যবহারের অনুমতি দেবে। আগামী বুধবার থেকে মুক্ত মঞ্চে জিটিএ-র সংস্কৃতি এবং পর্যটন উৎসবের নানা অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। একমাস ধরে প্রতিদিন-ই মঞ্চে নানা অনুষ্ঠান হবে বলে এ দিন জানানো হয়েছে। এ দিন উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে পর্যটনের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কথা জানানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ম্যাল রোডে একটি ২০ ফুট চওড়া এবং ২০ ফুট লম্বা এলইডি স্ক্রিন লাগানোর কথা। ওই স্ক্রিনে ট্রেন ও প্লেনের সময়সূচি জানানো হবে।
জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দাওয়া লেপচা জানিয়েছেন, মানেভঞ্জন থেকে ফালুট পর্যন্ত নতুন রাস্তা তৈরি হবে। এই রাস্তাটি সান্দাকফুর ট্রেকিং রাস্তা বলেও পরিচিত। ইতিমধ্যে ৫২ কিলোমিটার এই রাস্তা তৈরির জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়াও চলছে বলে লেপচা জানিয়েছেন। রাস্তায় থাকা বিভিন্ন ‘ট্রেকার্স হাটও’ সংস্কারও হবে বলে জানানো হয়েছে। লেপচা বলেন, “কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত একটি বিকল্প রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্তও হয়েছে।”