ব্যবসা বন্ধ জলপাইগুড়ি শহরে।
বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার রাতে মোটরবাইকের ধাক্কায় এক কাগজের ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার গৌড়ীয় মঠের কাছে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত ব্যবসায়ীর নাম দেবাশিস ধর (৫৬)।
মারাত্মক জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। দুর্ঘটনায় জখম দুই বাইক আরোহীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মোটরবাইকের তাণ্ডবের প্রতিবাদে বুধবার শহরের দিনবাজার-সহ কিছু এলাকার ব্যবসায়ীরা দুপুরের পরে ব্যবসা ধর্মঘট করেন। শহর থেকে মোটরবাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের স্মারকলিপি দেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিকেলের পরে বাইক বাহিনীর তাণ্ডবের জেরে শহরের রাস্তায় চলাচল করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেশাগ্রস্থ একদল যুবক ট্রাফিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাইক নিয়ে শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীদের। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “ট্রাফিক নিয়ম অমান্য করে চলা বাইক প্রতিদিন ধরা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।”
গত ৬ অক্টোবর মোটরবাইকের ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। গত পয়লা নভেম্বর এক পথচারী জখম হন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনও ঘটনার পরে কয়েকদিন ধরপাকড় হলেও পরে একই পরিস্থিতি দেখা যায়। শহর জুড়ে গাঁজা, ট্যাবলেটের নেশার ঠেক গজিয়েছে। কিছু যুবক নেশা করে যেমন খুশি মোটরবাইক নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। নর্থ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের সদস্য বিশ্বজিত্ মিত্র বলেন, “বিকেলের পর থেকে শহরের বেশিরভাগ রাস্তায় নজরদারির ব্যবস্থা নেই। শুধু হাইওয়েতে টহল দিয়ে বেড়ায় পুলিশ।” সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পুরজিত বক্সি জানান, বেপরোয়া মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য বন্ধের জন্য সচেতনতা বাড়াতে নাগরিক কনভেনশন করা হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে শহরের নিউ সার্কুলার রোডের বাসিন্দা দেবাশিসবাবু বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিস্তা পর্যটক আবাসে যান। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হেঁটে বাড়িতে ফেরার সময় পেছন দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি বাইক তাঁকে ধাক্কা মারে। মৃতের আত্মীয় তপন ভট্টাচার্য বলেন, “আজ, বৃহস্পতিবার সকালে বাইক আরোহী দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে।”