উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কার্যনির্বাহী সহায়ক অমিত দত্তের দাম্পত্য কলহ গড়াল শিলিগুড়ি থানা পর্যন্ত। বুধবার বিকেলে বিবাদের জেরে শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিশ পৌঁছয় অমিতবাবুর বাড়িতে। তিনতলা আবাসনের দোতলায় অমিতের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ অফিসাররা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানা গিয়েছে। দু’পক্ষই বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে বলে জানালে প্রায় আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ ফিরে যায়। যদিও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশবন্ধুপাড়ার গোপাল মোড়ে অমিতের বাড়ির সামনে জটলা দেখা যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে অমিতের পরিবারের সদস্যদের প্রকাশ্যেই বিবাদ বাধে। পরে দু’পক্ষই আলোচনায় বসায় রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কাছেও কোন পক্ষ মুখ খুলতে চাননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতির কার্যনির্বাহী সহায়কের নাম জড়িয়ে বিবাদের জেরে এলাকায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বলে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দাবি। দুর্ঘটনার পরে অমিত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে মন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও, গৌতমবাবু এ দিন বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। অমিতের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”
বাড়িতে পুলিশ আসা অথবা বিবাদের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, এ দিন সন্ধ্যায় অমিত বলেন, “আমার কিছু জানা নেই।” অমিতের শ্বশুরবাড়ির তরফেও জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা এখনও সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি নন। বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন বিকেলে অমিতের স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরলে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাবার বাড়ির সদস্যরা চলে আসায় দুই পরিবারের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়ে যায়।
রাস্তা থেকেই পুলিশে ফোন করেন বধূর বাবার বাড়ির এক সদস্য। এর পরেই শিলিগুড়ি থানা থেকে পুলিশ ভ্যান এসে পৌঁছয় অমিতের বাড়ির সামনে। ততক্ষণে এলাকার বাসিন্দারাও অমিতের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে পড়েন। পাড়ার বিভিন্ন বাড়ির দরজার সামনে বাসিন্দাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। চলে আসে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা। কিছুক্ষণ দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বচসাও চলে বলে বাসিন্দাদের দাবি। এর পরে দুই পরিবারের সদস্যরা আলোচনা শুরু করেন বলে জানা যায়। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “অভিযোগ না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।”
পারিবারিক সূত্রের খবর, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর অমিতের বিয়ে হয়। গত ২৫ জানুয়ারি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে অমিতের বিরুদ্ধে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বাইক দুর্ঘটনায় অমিতের বাঁ পা ভেঙে যায়। শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে বেশ কিছুদিন থাকার পরে অমিত ভিনরাজ্যে চিকিৎসার জন্য যান। এ দিন দুপুরে অমিত লেকটাউন এলাকার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার কথা বলে বলে জানা গিয়েছে। তার পরে বিকেলে অমিতকে দেখতে স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে যান। তখনই বচসার সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে।