সারদা মামলায় রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়া মন্ত্রী মদন মিত্রের গ্রেফতারের প্রতিবাদে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ‘মহামিছিল’ হবে বলে ঠিক ছিল। মঙ্গলবার বিকেলের পরে সেই মিছিল হল বটে কিন্তু তাকে মহামিছিল বলতে চাইলেন না দলেরই অনেক নেতা।
পূর্ব ঘোষিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে বিকাল পাঁচটা নাগাদ শহরের সমাজপাড়া থেকে মিছিল বার হয়। দিনবাজার, বেগুনটারি, কদমতলা, ডিভিসি রোড হয়ে সন্ধ্যা ছটা নাগাদ সমাজপাড়াতে এসেই মিছিল শেষ হয়। কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পা মেলান জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু, ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়, জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ সহ অন্যান্য নেতারা। ফেস্টুন, পতাকা, দলনেত্রীর কাটআউট, প্ল্যাকার্ডে বিজেপি এবং সিবিআই-এর চক্রান্তের অভিযোগ নিয়ে স্লোগানও ওঠে। কিন্তু শাসকদলের আর দশটা মিছিলের মতো এদিন উচ্ছ্বাস দেখল না শহর। পথচারীদের অনেকেরই বক্তব্য, “মিছিল চলে গেল পাশ দিয়ে, অথচ তা খুব একটা বোঝাই গেল না।” অথচ গত সোমবার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব সাংবাদিক সম্মেলন করে মহামিছিল হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন।
পুলিশের হিসাবে, মেরেকেটে হাজার-বারশো কর্মী, সমর্থক সামিল ছিলেন এই মিছিলে। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভবাবুর দাবি, “দুই হাজার কর্মী সমর্থক মিছিলে ছিলেন। এটা জেলার মিছিল নয়। শহরের কর্মীদের নিয়ে ২৪ ঘণ্টার নোটিশে ভালই মিছিল হয়েছে।” দলেরই একাংশই জানান, পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একশো থেকে দেড়শো কর্মী সমর্থক মিছিলে এলে ছবি পাল্টে যেত। সকাল থেকে অনেকের সঙ্গেই ফোনে যোগাযোগ করা হয়। অনেকেই উৎসাহ দেখাননি। মিছিল শুরুর আগে সমাজপাড়ার মাঠে দাঁড়িয়ে শহরের অনেক তৃণমূল কর্মীই জানান, যে কারণে মিছিল হচ্ছে, সেটা পছন্দ নয়। কেউ গ্রেফতার হলেই দোষী হয় না। আদালতে বিচার হবে। কিন্তু তার আগে রাস্তায় নেমে পড়াটা বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার সামিল। জেলা তৃণমূল সভাপতির অভিযোগ, সিবিআইকে ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় সরকার তৃণমূল নেত্রীকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রীর গ্রেফতারিতেই তা স্পষ্ট।