ডুয়ার্সের জয়গাঁর কর্মিসভায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: নারায়ণ দে।
ডুয়ার্সের জয়গাঁয় গিয়ে আগের মতো সাড়া পেলেন না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।
রবিবার জয়গাঁয় দলের অফিসের সামনে চেয়ার-টেবিল নিয়ে কর্মিদের জন্য দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করেন গুরুঙ্গ। কিন্তু আগের মতো ভিড় উপচে পড়েনি। কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা বেশ কম ছিল। অথচ বছর তিনেক আগেও গুরুঙ্গ জয়গাঁয় গেলে দলের অফিসের সামনে উপচে পড়ত ভিড়। জিটিএ গড়ার পর কয়েক দফায় গুরুঙ্গ জয়গাঁয় গেলেও অল্পবিস্তর ভিড় হয়েছে। এ বার প্রায় ফাঁকা অফিসে বসেই ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন গুরুঙ্গ। বেলা ১০টা নাগাদ দলীয় কার্যালয়ে থেকে বেড়িয়ে জয়গাঁয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একটি ভবন উদ্বোধন করতে যান তিনি। গুরুঙ্গ জানান, আসন্ন বিধানসভা ভোটে মোর্চা একা লড়তে পারে। যদিও এ দিনই জয়গাঁয় গুরুঙ্গের সঙ্গে দেখা করেন আদিবাসী নেতা জন বারলা। তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন গুরুঙ্গ ফের রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। এ বার তাঁর অভিযোগ, “বাংলার রাজ্য সরকার জাতপাতের রাজনীতি করছে। পাহাড়ে নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের রাজনীতি করছে। তবুও গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে আসব না।” তিনি জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছি। আগামী ১ মার্চ দিল্লি যাচ্ছি। ১৬-১৭ মার্চ যে কোনও সময় তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন মোর্চা নেতারা।
দলের সভাপতির কর্মিসভায় ভিড় হল না কেন? ডুয়ার্সের মোর্চা নেতা সুরেশ ঠাকুরির ব্যাখ্যা, “দলীয় কার্যালয়ের বাইরে চেয়ার-টেবিল পাতা হয়েছিল। বিমল গুরুঙ্গ বসে মানুষের সমস্যার কথা শুনবেন বলে। এলাকার মানুষ অবশ্য তাদের সমস্যা লিখিত ভাবে দিয়েছেন। তবে এটা কোনও সভা বা কর্মিসভা ছিল না, তাই আমাদের সমর্থকরা ভিড় করেননি। শুধু স্থানীয় বাসিন্দারা এসেছিলেন।” তাঁর আরও দাবি, গুরুঙ্গ জয়গাঁয় একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। আজ, সোমবার বীরপাড়ায় সভা করবেন গুরুঙ্গ। মোর্চার দাবি, সেখানে ভিড় উপচে পড়বে।
তবে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী কিন্তু অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে মানুষ সমর্থন করে না এটা আগেই পরিষ্কার হয়েছে। গুরুঙ্গের দলীয় কার্যালয়ে যে ভিড় কমছে এটা তার একটা উদাহরণ।” আরএসপির আলিপুরদুয়ারের জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, “মানুষ বুঝতে পেরেছেন, গোর্খল্যান্ড হবে না। আমাদের দল থেকে যাঁরা মোর্চায় গিয়েছিলেন, তাঁরা ফিরে এসেছেন।”
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর একে একে কালচিনির মোর্চা সমর্থিত নির্দল বিধায়ক সহ একাধিক পঞ্চায়েত সমতির সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েত সহ বহু নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় অনেকটাই শক্তি হারিয়েছে মোর্চা। সে ক্ষেত্রে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কী ভাবে লড়বেন? গুরুঙ্গ বলেন, “কিছু লোক চলে গিয়েছে। তবে এতে দলে কোনও প্রভাব পড়েনি।”