নয়া মজুরি চুক্তির দাবিতে চা বলয়ে বিরোধীদের ডাকা টানা দু’দিন ‘সফল’ শ্রমিক ধর্মঘটে চিন্তিত তৃণমূল নেতৃত্ব। আর সে কারণেই শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের মোকাবিলায় শ্রমিক ফেডারেশন গঠন করতে উদ্যোগী হয়েছে শাসক দল। ওই বিষয়ে প্রথমিক আলোচনাও সেরে ফেলেছেন তাঁরা। আগামী ২২ নভেম্বর কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে ফেডারেশনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের তিনটি নামে সংগঠন রয়েছে চা বলয়ে। সেগুলিকে এক ছাতার তলায় আনা হবে। এছাড়াও কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনগুলিকে কাছে টেনে আনা হবে।” জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর ওই বিষয়ে আলিপুরদুয়ারে চা শ্রমিক নেতৃত্বকে নিয়ে আলোচনায় বসেন সৌরভবাবু। সেখানেই গত ১১ নভেম্বর এবং ১২ নভেম্বর ২৩টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের ডাকা বন্ধের প্রসঙ্গ ওঠে। সভায় উপস্থিত ৭১ জন শ্রমিক নেতার অধিকাংশ জানান, মূলত বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি ওই মঞ্চের নেতৃত্বে রয়েছে। কংগ্রেস সহ অন্য কয়েকটি দল তাতে সামিল হয়েছে। ওই যৌথ মঞ্চের মোকাবিলা করা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। চা বলয়ে এখনও কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের ভাল প্রভাব রয়েছে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়। সৌরভবাবু বলেন, প্রাথমিক আলোচনার পরে মঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর কলকাতায় সভা করে সেটাতে অনুমোদন দেওয়া হবে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেডারেশন তৈরির প্রস্তাব নিয়ে ওই সভায় উত্তরবঙ্গের ৩১ জন শ্রমিক নেতা অংশ নিচ্ছেন। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের কয়েকজন নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সভায় তৃণমূলের শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক প্রমুখের।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চা বলয়ে তৃণমূল তেমন প্রভাব বাড়াতে পারছে না এখনও বামপন্থী এবং কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের দখলে রয়েছে। বেশিরভাগ বাগান দু’দিনের ধর্মঘটে সেটা আরও প্রকট হয়েছে ওই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে ফেডারেশন গড়ে এবার পাল্টা কৌশলে নামতে চলেছে তৃণমূল। যদিও, কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এনইউপুডব্লুর নেতা মনিকুমার ডার্নাল বলেন, “সৌরভবাবু বরং নিজের ঘর গোছানোর চেষ্টা করুন। কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন নিয়ে ওঁকে ভাবতে হবে না।”