দার্জিলিং থেকে ভোট গণনা কেন্দ্র শিলিগুড়িতে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে জলঘোলা হতে শুরু করেছে। এ দিকে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই দার্জিলিং পাহাড়ে আসতে পারেন দেশের উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুৎসি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জুৎসির সফরের কথা মাথায় রেখেই গণনা কেন্দ্র সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযোগ এবং বিতর্কের নিষ্পত্তি করতে আসরে নেমেছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে শিলিগুড়ির বদলে দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চ ভবন (ভানু ভবন)-এ ওই গণনা কেন্দ্র হতে পারে। শুক্রবার দার্জিলিঙে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের কেউই এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কমিশনের অনুমতি না মেলা পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয়।
ভানু ভবন জিটিএ-এর আওতায়। জিটিএ-এর সবুজ সংকেত না পাওয়া গেলে ওই ভবন জেলা প্রশাসন গণনা কেন্দ্রের জন্য ব্যবহার করতে পারবে না। তবে জিটিএ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভানু ভবনে পাহাড়ের তিন মহকুমার ভোট গণনা কেন্দ্র হলে আপত্তি করা হবে না। জিটিএ-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা রোশন গিরি বলেছেন, “আমিও বিষয়টি শুনেছি। তবে সরকারি ভাবে কোনও খবর আমার কাছে আসেনি। তাই এখনই চূড়ান্ত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত সব লোকসভা ভোটে পাহাড়ের তিন বিধানসভা দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াঙের ভোট গণনা দার্জিলিং পাহাড়েই হয়েছে। এ বারই প্রথম গণনার কাজ শিলিগুড়ি কলেজে হবে বলে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত যে যুক্তিতে গণনা কেন্দ্র সমতলে সরানো হয় তা হল, পাহাড়ে যেখানে এত দিন গণনা হতো, সেই কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। সে ব্যাপারে একটি মামলায় কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে জিতেছেন। প্রশাসনের আরও যুক্তি ছিল, পাহাড়ে অন্যত্র বড় ঘর মিলছে না। কোথাও অস্থায়ী ভাবে ব্যারাক গড়ে গণনার কাজ করতে প্রচুর খরচ। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পিছনে রাজনীতি আছে বলে অভিযোগ তোলে মোর্চা-সহ পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলি। বিতর্ক দানা বাঁধায় খোঁজখবর করে নির্বাচন কমিশনও। সরকারি সূত্রেই জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এসে জুৎসিও পাহাড়ের অভিযোগকারীদের দাবি অগ্রাহ্য করেননি। বরং তিনি পাহাড়ে গিয়ে সরেজমিনে বিষয়টি খোঁজ নিতে পারেন বলেও অনুমান করে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এরপরেই বিতর্ক ও অভিযোগের হাত থেকে রেহাই পেতে আসরে নামে প্রশাসন।