শিলিগুড়ি কার্নিভাল ঘোষণার কোনও এক্তিয়ার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নেই বলে দাবি করলেন, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী, সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। শনিবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে দলীয় কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে, এই কার্নিভালের নামে রাজ্য সরকার পুর ভোট পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেও অশোকবাবুর অভিযোগ। যদিও আইন মেনেই সমস্ত অনুষ্ঠানের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান শিলিগুড়ির পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া। অশোকবাবুর দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মন্ত্রীর বক্তব্য, “যা বলার দলের তরফে জেলা কমিটির সদস্য কৃষ্ণ পাল বলবেন।”
আগামী ১৫ থেকে ২১ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি পুর এলাকায় আয়োজন করা হচ্ছে শিলিগুড়ি কার্নিভালের। প্রতি বছর ওয়ার্ড ভিত্তিক এবং পরে সংযুক্তভাবে দুুটি পর্যায়ে শিলিগুড়ি উত্সব করা হয় পুরসভার পক্ষ থেকে। বর্তমানে বোর্ড চালাচ্ছেন রাজ্য সরকার নির্ধারিত প্রশাসক বোর্ড। ফলে শিলিগুড়ি উত্সব করা সম্ভব হচ্ছে না। তার বদলে হচ্ছে শিলিগুড়ি কার্নিভাল। শিলিগুড়ি পুরসভা গোটা ব্যপারটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকলেও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ও পর্যটন দফতর আয়োজনে সাহায্য করবে। এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অশোকবাবু। তিনি বলেন, “পুরসভার অনুষ্ঠান হবে, সেটা মন্ত্রী ঘোষণা করতে পারেন না। উনি পুরসভার সব কাজ নিজেই ঠিক করছেন। ওঁর পুরসভা চালানোর ইচ্ছে থাকলে উনি প্রশাসক হতে পারতেন। আমরা এ বিষয়ে জানতে ক্যাগের (কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) দ্বারস্থ হব। কীভাবে উনি অর্থ খরচ করছেন তাও জানতে চাইব।” শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার অবশ্য বলেন, “সমস্ত কিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে।” এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। তৃণমূল নেতা কৃষ্ণবাবুর দাবি, “প্রাক্তন পুরমন্ত্রী আইন-কানুন নিয়ম কিছুই জানেন না। মানুষের কাছে যাওয়ার প্রাসঙ্গিকতা সিপিএম হারিয়ে ফেলেছে। তাই ক্যাগ, সিবিআই, রাজ্যপাল ছাড়া আর কারও কাছে ওঁদের যাওয়ার নেই। ওঁদের জানিয়ে দিই, প্রশাসকের মেয়াদ ছ’মাস। তারপরে এমনিই নির্বাচন করতে হবে। উনি কিছুই জানেন না।”
ডেঙ্গি নিয়েও অশোকবাবুরা রাজ্য সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করেন। অশোকবাবু ছাড়াও এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের নুরুল ইসলাম। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বলেন, “ঠান্ডা ঘরে বৈঠক করলেই ডেঙ্গি কমবে না। তার জন্য যা করার দরকার তা করছে না রাজ্য সরকার। শুধু লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য কাজ হচ্ছে।”এই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষ্ণবাবু। তিনি বলেন, “বাম আমলেও অজানা মারণ জ্বর, ডেঙ্গি হয়েছিল। তাঁরা তখন অনেক কিছুই করেননি।”