হাড়িয়ার নেশা করে মেয়ের উপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। দিনের পর দিন এমন চললেও শেষে তা সহ্য করতে না পেরে জামাইকে কোদালের কোপ দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ডুয়ার্সের শামুকতলা থানার আদিবাসী মহল্লা ঢিপধুরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম আগস্টু কিস্কু (২৮)। ধৃত শ্বশুরের নাম অর্জুন মুর্মু।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, আগাস্টু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনি স্ত্রী এলিজাবেথ ও দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। আগস্টু উপার্জনে টাকা সংসারে দিতেন না বলে অভিযোগ। এলিজাবেথ ও শ্বশুর দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। অভিযোগ, আগাস্টু সারাদিন হাড়িয়ায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। টাকা চাইলেই নেশা করে এসে শ্বশুরকে গালিগালাজ ও স্ত্রীকে মারধর করতেন। এলিজাবেথ জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী সংসারে খরচ দিত না বলে তাঁর বাবা মাঝে তাঁদের আলাদা করে দেন। দুই সন্তানকে নিয়ে প্রায় না খেয়ে কাটাত হত দেখে বাবা আবার মেয়েকে ডেকে নেন। তিনি বলেন, “তার পরেই স্বামী কথা শুনত না। রোজ বাড়িতে অশান্তি করত।” রবিবার দুপুরে তাঁর বাবাও নেশা করে এসে রাগারাগি করেন। দু’জনে বেশ কিছুক্ষণ ঝগড়াও হয়। তখনকার মতো সব মিটে যায়। রাতে তাঁর স্বামী নেশা করে বাড়িতে আসেন। বাবা তখন ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এলিজাবেথের অভিযোগ, “বাড়িতে ঢুকে স্বামী আমাকে, বাবাকে গালিগালাজ শুরু করেন। বাবাকে লক্ষ করে গুলতি ছুড়তে থাকেন। তার পরেই বাবা ঘরের পাশে রাখা কোদাল দিয়ে ওঁর মাথায় কোপ বসিয়ে দেন।” প্রতিবেশীরা জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন আগাস্টু। ভ্যানরিকশায় চাপিয়ে শামুকতলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। এলিজাবেথের কথায়, “স্বামী মারা গেলেন। বাবাও গ্রেফতার হয়ে গেল। দুই সন্তানকে নিয়ে পথে বসে গেলাম।”রাতেই পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “জামাইকে খুন করার অভিযোগে শ্বশুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত যুবক নেশা করে স্ত্রীর উপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। একটি কোদাল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।