এসজেডিএ-র টাকা বিদেশে কি, খোঁজ নিচ্ছে ইডি

‘সারদা’র মতো ‘শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (এসজেডিএ) নয়ছয় হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকার কিছুটা বিদেশে পাঠানো হয়েছে কি না, খোঁজ নিতে শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। নয়ছয় হওয়া টাকা কাদের মাধ্যমে, কী ভাবে, কোথায় পৌঁছেছে তা বুঝতে চাইছে তারা। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকা নয়ছয়ে অভিযুক্ত ও সন্দেহভাজনদের বিদেশে যোগাযোগের ব্যাপারে ‘ইডি’ ইতিমধ্যেই তথ্য নিয়েছে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪০
Share:

‘সারদা’র মতো ‘শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (এসজেডিএ) নয়ছয় হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকার কিছুটা বিদেশে পাঠানো হয়েছে কি না, খোঁজ নিতে শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। নয়ছয় হওয়া টাকা কাদের মাধ্যমে, কী ভাবে, কোথায় পৌঁছেছে তা বুঝতে চাইছে তারা। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকা নয়ছয়ে অভিযুক্ত ও সন্দেহভাজনদের বিদেশে যোগাযোগের ব্যাপারে ‘ইডি’ ইতিমধ্যেই তথ্য নিয়েছে।

Advertisement

তবে এসজেডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার বলেছেন, “কত টাকা, কোথায় গিয়েছে তা জানতে ইডি খোঁজ নিচ্ছে, সেটা ভাল কথা। সেই টাকা কোন নেতার কাছে গিয়েছেএমন নানা তথ্য সামনে আসা দরকার। কারণ, সব টাকাই আমজনতার।” তাঁর সংযোজন, “আমাদের সময়ে এসজেডিএ-তে প্রায় ১৮০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হয়। সেখান থেকে টাকা নয়ছয়ের মতো বেদনাদায়ক আর কিছু হতে পারে না। টাকা উদ্ধার করতে হবে। সে জন্য আমরা বামফ্রন্টের তরফে ওই মামলার সিবিআই-তদন্ত চাইব।”

এসজেডিএ-তে প্রথম ৬০ কোটি এবং পরে আরও ৪০ কোটি টাকা নয়ছয়ের আশঙ্কা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। তদন্তে নেমে পুলিশ আগেই দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের একাংশের ঘনঘন বিদেশে যোগাযোগের তথ্য পেয়েছিল। যেমন, গত দু’বছরের মধ্যে অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জন নানা সময়ে দুবাই, ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুর গিয়েছেন। মামলায় জেরার মুখে পড়েছেন যাঁরা, তাঁদের একাংশের বিদেশে যোগাযোগের ব্যাপারেও স্পষ্ট তথ্য তদন্তকারীদের হাতে পৌঁছেছে।

Advertisement

এসজেডিএ সূত্রের খবর, এ পর্যন্ত পুলিশি-তদন্তে যা মিলেছে সে ব্যাপারে ইডি অনেকটাই ওয়াকিবহাল। ওই ঘটনায় পুলিশ যাঁদের জেরা করেছে, ইডি তাঁদের ডেকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ওই মামলায় আগেই জেরা করা হয়েছে শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা এসজেডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক তথা দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার, শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা এবং তৃণমূলের জলপাইগুড়ির সাংগঠনিক সভাপতি চন্দন ভৌমিককে। শঙ্করবাবু, চন্দনবাবু ও রঞ্জনবাবু এখনও এসজেডিএ-র বোর্ড সদস্য।

তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘ইডি’ যাঁর সঙ্গে কথা বললে এ ব্যাপারে তথ্য পেতে পারে বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ এসজেডিএ কর্তার অনুমান, সেই গোদালা কিরণকুমার কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের ধারণা স্পষ্ট নয়। মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এসজেডিএ-র প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা মালদহের প্রাক্তন জেলাশাসক কিরুণকুমার গত মাস চারেক মহাকরণে যাচ্ছেন না। তিনি বর্তমানে কোথায় রয়েছেন, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে স্পষ্ট কোনও নথিও নেই বলে প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন। কোন ঠিকানায় চিঠি পাঠালে তাঁকে তলব করা যাবে, সেটা এসজেডিএ-র তরফে কেউ ‘ইডি’র কাছে স্পষ্ট করতে পারেননি। এ ব্যাপারে গোদালা কিরণকুমারের আইনজীবী অত্রি শর্মা বলেন, “মামলাটি বিচারধীন। তাই আমি বা আমার মক্কেল যা বলার, শুধু আদালতেই বলব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement