এলাকায় বিদ্যুৎ দফতর খুলতে না দেওয়ার হুমকি মোর্চার

অস্বাভাবিক হারে বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ মেটাতে পদক্ষেপ না হলে আগামী সপ্তাহ থেকে জিটিএ-এলাকায় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কোনও দফতর খুলতে দেবে না বলে হুমকি দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দার্জিলিঙের বিভিন্ন বাড়িতে গত কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিকের থেকে তিন-চার গুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল আসছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৮
Share:

অস্বাভাবিক হারে বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ মেটাতে পদক্ষেপ না হলে আগামী সপ্তাহ থেকে জিটিএ-এলাকায় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কোনও দফতর খুলতে দেবে না বলে হুমকি দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দার্জিলিঙের বিভিন্ন বাড়িতে গত কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিকের থেকে তিন-চার গুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল আসছে বলে অভিযোগ। এ দিন বৃহস্পতিবার সেই সমস্যা সব বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে বন্টন কোম্পানির সঙ্গে জিটিএ সদস্যদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপের আশ্বাস কোম্পানির তরফে মিলেছে। বৈঠকের পরে জিটিএ সদস্য তথা মোর্চা নেতারা জানিয়েছেন, সমস্যা না মিটলে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে জিটিএ এলাকায় বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কোনও অফিস খুলতে দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে মোর্চার দাবি, জিটিএ চুক্তিতে পাহাড়ের বিভিন্ন জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয়ের একটি ভাগ জিটিএকে দেওয়ার শর্ত ছিল। সেই চুক্তিও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। রিম্বিকে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনটিপিসি-এর একটি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে হওয়া আয়ের অংশ না পেলে ওই নির্মাণ শুরু করতে বাধা দেওয়া হবে বলেও এ দিন মোর্চার তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বিদ্যুৎ বিল নিয়ে মোর্চার অভিযোগের তালিকায় শুধু অতিরিক্ত বিল নয়, বকেয়া বিলও রয়েছে। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পাহাড়ে অসহযোগ আন্দোলন চালায় মোর্চা। সে সময় বিদ্যুৎ এবং টেলিফোন বিল না দেওয়ার ডাক দিয়েছিল মোর্চা। সে বাবদ দার্জিলিঙের তিন মহকুমায় ঘরোয়া এবং বাণিজ্যিক সংযোগ মিলে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছিল। মোর্চার অভিযোগ, ওই বকেয়া বিলের টাকাই বর্তমান বিলে জুড়ে দেওয়ায় বিলের অঙ্ক অস্বাভিক রকম বেড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির তরফে অবশ্য এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। সংস্থার দাবি, বর্তমানে ‘স্পট বিলিং’ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর ফলে মিটার রিডিঙে কোনও ভুল থাকার সম্ভাবনা নেই, তার ফলেই অনেকের বেশি বিল আসছে বলে মনে হচ্ছে বলে সংস্থার আধিকারিকদের দাবি।

এ দিনের বৈঠকে জিটিএ-এর চিফ তথা মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে জিটিএ-এর সদস্য তথা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “রাজ্যের বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা। তা না হলে পরদিন থেকে সংস্থার কোনও দফতর খুলতে দেওয়া হবে না।” মোর্চার অভিযোগ, যে সব বাড়িতে প্রতি মাসে গড়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত, সেখানে এখন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার বিল আসছে। জিটিএ চুক্তি মেনে পাহাড়ের বিভিন্ন কেন্দ্রে তৈরি বিদ্যুত বিক্রির আয়ের অংশ জিটিএকে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে রোশন বলেন, “জিটিএ চুক্তি মতো বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ আয়ের অংশ আমরা পাচ্ছি না। বকেয়া বিল যদি মেটাতে হয়, তবে সেই না দেওয়া অংশ থেকে মিটিয়ে দিক রাজ্য।” এ দিন রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফে আঞ্চলিক ম্যানেজার শিবেশ দেব বৈঠকে ছিলেন। তাঁর কথায়, “বিদ্যুতের বর্তমান বিলে পুরোনো বকেয়া বিল জুড়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এ দিন জিটিএর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার বিষয়বস্তু কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। নির্দেশ মতো ব্যবস্থা হবে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement