ফাঁসিদেওয়ার কর্মিসভায়।—নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও পুরসভা ভোটে এককভাবেই কংগ্রেস লড়বে বলে ঘোষণা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় জেলা কংগ্রেসের একটি কর্মিসভায় যোগ দিতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি।
সারদা মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল যতই মামলা লড়ুন, তাতে রাজ্যের কংগ্রেসের একা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। সিব্বলের এই পদক্ষেপে কংগ্রেস ও তৃণমূলের কাছাকাছি আসার জল্পনাও উড়িয়ে দেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিলিগুড়িতে পঞ্চায়েত ও পুরসভায় এককভাবেই লড়বে কংগ্রেস। এর আগে শিলিগুড়ি পুরসভায় তৃণমূলের সঙ্গে জোটের ফল ভুগতে হয়েছে শহরবাসীকে। এর পুনরাবৃত্তি হবে না।” তৃণমূলের উদ্দেশ্য ছিল কংগ্রেসের মেয়র অযোগ্য তা পাঁচ বছর ধরে প্রমাণ করে যাওয়া বলেও মন্তব্য করেন অধীরবাবু। শুধু এখানেই নয়, রাজ্যও জোটের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি এদিন জানান।
এদিন ফাঁসিদেওয়া বেসিক স্কুলের মাঠে ভিড়ে ঠাসা কর্মিসভা দেখে উচ্ছ্বসিত অধীর চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকার, বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা সহ জেলা ও স্থানীয় নেতারা। প্রত্যেক বক্তাই মূলত দলত্যাগী প্রার্থীদের জবাব দেওয়ার দাবি তুলেছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি জানান, তাঁরা চারটি পঞ্চায়েত সমিতির তিনটিতেই জিতেছিলেন। একটা সিপিএমের দখলে ছিল। তা সত্বেও ভোটের পরে তৃণমূল, প্রার্থী কিনে পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে। তাতে অবশ্য সাধারণ মানুষকে তৃণমূলমুখী করা যায়নি বলে শঙ্করবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “এরপরেও ফাঁসিদেওয়া হাইস্কুলের নির্বাচনে কংগ্রেস ৬-০ ফলে জিতেছে। এতেই প্রমাণিত মানুষ কী চায়।” আসন্ন নির্বাচনেও এর অন্যথা হবে না বলে দাবি করেন স্থানীয় নেতারা। ফাঁসিদেওয়ায় কর্মিসভা করার পর শিলিগুড়িতে বর্ধমান রোডের একটি ভবনে পুর এলাকার নেতা কর্মিদের নিয়ে সভা করেন অধীরবাবু। সেখানেও এককভাবে লড়াইয়ের কথা জানিয়ে কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন। শঙ্করবাবু জানান, ৪৭ টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দেবেন তাঁরা।
এদিন মঞ্চে তাঁর বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে অধীরবাবু জানান, বাম আমলের মত তৃণমূলও শিল্প বন্ধের দিকেই মনোযোগী। ৭ কোটি টাকা খরচ করে উত্তরকন্যায় অতিথি নিবাস তৈরি না করে তার কিছু টাকায় চা শ্রমিকদের সাহায্য করা যেত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সে পথে হাঁটেননি। তিনি রাজ্যগুলিকে চা বাগান অধিগ্রহণ করার ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে এদিন দাবি করেন। বিধান রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে রাজ্যকে দেশে দ্বিতীয় স্থানে এনেছিলেন, কিন্তু বর্তমানে ১৩ নম্বর স্থানে এসে পৌঁছেছে বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মন্তব্য করেন। একশো দিনের কাজ নিয়েও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বিঁধেছেন তিনি। এই সরকারের আমলে একশো দিনের কাজ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।