পিচ পড়ছে দোমহানি থেকে রামসাই পর্যন্ত রাস্তাটিতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া বনবাংলো রাইনো ক্যাম্পের চেহারা পাল্টে গিয়েছে রাতারাতি। আগামী ২ ডিসেম্বর রাতে উত্তরবঙ্গ সফরে এসে সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে পারেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও প্রশাসনিক কর্তারা এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না। জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “সব রকম প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।”
সেই দিকে তাকিয়ে বসানো হয়েছে পথবাতি, গোপন ক্যামেরা। একটি কটেজ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। গরম জলের ব্যবস্থার জন্য বাথরুমে বসানো হয়েছে গিজার। আনা হচ্ছে নতুন আসবাবপত্র। প্রতিটি জানালায় বসানো হচ্ছে ‘মসকিউটো নেট’। পুজোর আগে রং করানো হলেও ফের রং করানো হচ্ছে কটেজ। রাইনো ক্যাম্প থেকে আধ কিলোমিটার দূরে যাদবপুর চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। চলছে ভাঙাচোরা পিচ রাস্তা মেরামতের কাজ। দিনরাত সমান তালে চলছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের দৌড়ঝাঁপ।
২ তারিখ, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে সেখান থেকে তাঁর জলপাইগুড়ি যাওয়ার কথা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ি থেকে রওনা দিয়ে দোমহানি হয়ে রামসাই যাবেন। বৃহস্পতিবার ফিরে যাবেন ময়নাগুড়ি হয়ে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাইনো ক্যাম্প ফাঁকা রাখা হয়েছে। পর্যটকদের বুকিং নেওয়া হচ্ছে না। জলপাইগুড়ির ডিএফও (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক বলেন, “রাইনো ক্যাম্প বনবাংলো কিছু দিন থেকে ফাঁকা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসবেন, শোনার পরে নতুন করে বুকিং নেওয়া হচ্ছে না।”
২০০৫ সালে তৈরি হয় রাইনো ক্যাম্প। যা পর্যটক মহলে কদর পেয়েছে। এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন সেখানে। তাই আপাতত বনকর্মীদের মধ্যে ব্যস্ততা তুঙ্গে।
জঙ্গলে মোবাইল ফোনের নেট ওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে। তা মেটাতে রবিবারই প্রশাসনের কর্তারা বিএসএনএল-সহ বিভিন্ন মোবাইল সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেনারেটার থাকলেও লোডশেডিংয়ের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কটেজে ইনভার্টার রাখা হয়েছে।
দোমহানি থেকে রামসাই পর্যন্ত রাস্তার বিস্তীর্ণ এলাকা দীর্ঘদিন থেকে বেহাল হয়ে পড়ে থাকলেও তা মেরামতের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শনিবার থেকে সেখানে পিচের প্রলেপ পড়তে শুরু করেছে দেখে শ্যামল সরকার, বিমল দাসের মতো স্থানীয় যুবকেরা বলছেন, “প্রতি বছর মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসলে তো আমরা বাঁচি। তাতে আমাদের নিত্য দিনের সমস্যাগুলো এই ভাবেই মেটে।” মহকুমাশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার এবং দমকলের কর্তারা এলাকা ঘুরে দেখেন এ দিন।