অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক বধূর মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রতিবেশী মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুরের বাসিন্দা ওই মহিলার স্বামী ও তিন দেওরকেও খুঁজছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত শিবানী দাসের দেওর পাণ্ডব দাসই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত।
গত শুক্রবার রাতে অগ্নিদগ্ধ হন চুমকি স্বর্ণকার (২৫) নামের ওই বধূ। পর দিন সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার বধূর পরিবারের তরফে প্রতিবেশী পরিবারের পাঁচ জনের নামে অভিযোগ জানান মৃতার বাবা দুর্গা স্বর্ণকার। রবিবার রাতে পুলিশ প্রতিবেশী মহিলা শিবানী দাসকে গ্রেফতার করে। চাঁচলের এসডিপিও পিনাকী রঞ্জন দাস বলেন, “অভিযোগ পেয়েই মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্রুত অন্যদেরও ধরা হবে। কাউকে ছাড়া হবে না। জোরদার তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও বধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে বিহারের পূর্ণিয়ায় চুমকির বিয়ে হয়। দু’বছরের ছেলে বিট্টুকে নিয়ে গত ছ’মাস ধরে বাপের বাড়িতেই ছিলেন চুমকিদেবী। বিট্টু মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসার প্রয়োজনেই চুমকিদেবী ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে এসে থাকছিলেন বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। কারণ শ্বশুরবাড়িতে ছেলেকে দেখাশোনার মতো লোকজন নেই। বাপের বাড়িতে থাকা নিয়ে প্রতিবেশী ওই পরিবারের যুবক পাণ্ডব দাস মাঝেমধ্যে চুমকিদেবীকে উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। পাহাড়পুরে পাশাপাশিই বাড়ি চুমকিদেবী এবং পাণ্ডবের। শনিবার দুপুরেও পাণ্ডবের আচরণ নিয়ে দুই পরিবারে একপ্রস্ত বিবাদ হয়। তা নিয়ে রাতে পাণ্ডবের বাড়িতেই আলোচনা বসে। সেখানে হাজির ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্যও। সেখানে পাণ্ডব-সহ বাকি অভিযুক্তেরা চুমকিদেবীকে দুশ্চরিত্রা অপবাদ দেয় বলে অভিযোগ। এর পরে বাড়ি ফিরেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন চুমকিদেবী।
মৃতার মা লীলাদেবী বলেছেন, “জামাই মাঝে মধ্যে ভিন রাজ্যে যায় বলে মেয়েটা আমার কাছে ছিল। কিন্তু ওরা মেয়েকে মাঝেমধ্যেই নোংরা কথা বলত। অপমান সহ্য করতে না পেরেই মেয়েটা গায়ে আগুন দেয়।”
আলোচনায় উপস্থিত চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআই সদস্য শুভাশিস সাহা বলেন, “এলাকায় বিবাদ বা ঝামেলা হলে পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে আমাকে যেতে হয়। তাই ওরা ডাকলে যাই। দুপক্ষকে মিলেমিশে থাকার কথাই বলেছিলাম। যা ঘটেছে মর্মান্তিক। অভিযোগ হয়েছে। এ বার পুলিশ আইন মেনেই ব্যবস্থা নেবে।”