সিসি ক্যামেরার নজরে পড়ুয়ারা। ছবি: নারায়ণ দে।
অপ্রীতিকর ঘটনা আটকাতে ও দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য কলেজে ‘ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা’ বসালেন আলিপুরদুয়ার কলেজ কর্তৃপক্ষ। ছাত্র রাজনীতির জেরে মাঝে মধ্যে ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও তথ্য প্রমাণের অভাবে অনেক সময়েই সরাসরি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। তাই কলেজের কোনায় কোনায় নজরদারি চালাতে এ বার লাগানো হল ১৪টি সিসি ক্যামেরা।
কলেজ সূত্রের খবর, পুজোর ছুটির সময়ে কলেজের করিডর, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় ওই ক্যামেরাগুলি লাগানো হয়েছে। কলেজের কোথায় কী হচ্ছে, তা নিজের ঘরে বসে টিভিতে সরাসরি দেখতে পাবেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। আলিপুরদুয়ার কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি অমিতাভ রায় বলেন, “পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত নিয়ে কলেজ চত্বরে ক্যামেরা বসানো হয়েছে।” তিনি জানান, প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। প্রথম দিকে ক্যামেরার সংখ্যা কম লাগানোর কথা ভাবা হলেও প্রয়োজনীয়তা বুঝে তার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শৈলেন দেবনাথের বক্তব্য, একসময় কলেজে ছাত্র আন্দোলনের জন্য প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। কারও বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না থাকায় সেভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তাছাড়া বহিরাগতরাও কলেজে প্ররোচনা দেয় বলে অভিযোগ। সে জন্য কলেজের প্রাচীর দেওয়া ও গেট বসানোর কাজ চলছে। এখন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার প্রমাণ থেকে যাবে নজরদারি ক্যামেরায়। এতে পুলিশের পক্ষে দোষীদের সনাক্তকরণে সুবিধে হবে। তাছাড়া কলেজে পরীক্ষার সময়েও শিক্ষকদের হেনস্থা হতে হয়। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্যই এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মাস কয়েক আগে আমারা শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্মীদের উপস্থিতির সময় ঠিক রাখার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন বসিয়েছিলাম। এবার সিসিটিভি বসানোয় কলেজে নজরদারি অনেকটাই বাড়ল।”
কলেজের ছাত্র সংসদের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শশাঙ্ক দে বলেন, “আমরা বার বার কলেজে নিরাপত্তার জন্য সীমানা প্রাচীর গেট ও নজরদারির জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এ বার কলেজে কেউ মারপিট বা এ ধরনের কাজ করলে তা ক্যামেরাবন্দি হয়ে থাকবে।” এসএফআইয়ের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি মহানন্দ দে-ও মনে করেন কলেজের জন্য বিষয়টি ভাল।
শিক্ষকদের একাংশ জানান, ইদানিং কলেজে ভাঙচুরের ঘটনা কমলেও কলেজ চত্বরে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছিল। সন্ধ্যা নামলেই কলেজ চত্বরে বহিরাগতরা ঢুকে অপ্রীতিকর কাজকর্ম করত। এবার সব নজরদারির আওতায় চলে আসবে।