মুখ্যমন্ত্রীর সফরের প্রথম দিনে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যার কারণ দেখিয়ে শিলিগুড়িতে বামেদের মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। আর তাই সোমবার অনুমতি ছাড়াই শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে কলেজ পাড়া হয়ে পুরসভা পর্যন্ত মিছিল করল বামপন্থী বস্তি উন্নয়ন সমিতি।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার-সহ দলের প্রাক্তন কাউন্সিলররা, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরূদ্ধ বসু-সহ অন্যান্য নেতারাও মিছিলে ছিলেন। বিনা অনুমতিতে মিছিল করায় পুলিশের তরফে বামেদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালেই মিছিলে অনুমতি দেওয়া হবে না বলে বাম নেতাদের জানানো হয়েছিল। অনুমতি ছাড়া মিছিলের ভিডিও ছবিও তোলা হয়েছে বলে জানায় তারা।
অন্য দিকে, মিছিল বা সভা করার অনুমতি না মেলার অভিযোগে পাল্টা আন্দোলন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে বামেরা। এ দিন, মূলত বার্ধক্য ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, পাট্টা সহ বিপিএল তালিকাভুক্ত এবং বয়স্কদের নানা সুযোগ সুবিধে বিলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে মিছিল বিক্ষোভ করে বামেরা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে উত্তরকন্যা ঘেরাও অভিযান হবে বলেও এ দিন পুরসভা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে জানানো হয়েছে। শহরের সব ওয়ার্ড থেকেই বয়স্ক বাসিন্দাদের মিছিল বিক্ষোভে নিয়ে আসে বামেরা।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবুর অভিযোগ, “রাজ্য সরকার কোটি টাকা খরচ করে উত্সব করছে। কিন্তু দরিদ্র বাসিন্দারা পুরসভার থেকে যথাযথ সুবিধে পাচ্ছে না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা-সহ নানা বাহানা করে বস্তির বাসিন্দাদের ঘোরানো হচ্ছে। এই অভিযোগে আন্দোলনেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। এক মন্ত্রীর নির্দেশে বিরোধীদের কোনও সভা-মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না।”
বামেদের অভিযোগ, বার্ধক্য ভাতা-সহ আট মাস ধরে অন্যান্য ভাতা বন্ধ রয়েছে। যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, ভাতা বন্ধ নেই। কয়েক মাস পিছিয়ে রয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “রাজ্য সরকার গরিব মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। শহরে উত্সবের আলো জ্বলছে, কিন্তু বস্তিতে অন্ধকার রয়ে গিয়েছে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবুর দাবি, ভিত্তিহীন অভিযোগ। তাঁর কথায়, “উত্তরবঙ্গে এসে মুখ্যমন্ত্রী বিনিয়োগ জোগাড় করছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে। এই উন্নয়ন সহ্য করতে না পেরেই বিভ্রান্তিকর অভিযোগ তুলেছে বামেরা। বামপন্থীরা জানেন, মানুষ ওঁদের সঙ্গে নেই।”