প্রতীকী ছবি
আট বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার প্রতিবেশী এক যুবক। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বারবিশা লালস্কুল এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার রাতেই গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত এক প্রতিবেশী যুবক। জেরায় সে সমস্ত অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। আজ, বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে আলিপুরদুয়ার পকসো আদালতে তোলা হবে। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবার ও ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা অভিযুক্তের কঠিন শাস্তির দাবি তুলে সরব হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকারই একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী শিশুটি মঙ্গলবার বিকেলে স্কুল থেকে ফেরার পর বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যায়। তার পর থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ৯টায় পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন শিশুটির বাবা। পুলিশ তদন্তে নেমে শিশুটির চটি জোড়ার সন্ধান পায়। সেই সুত্র ধরেই অভিযুক্ত যুবককে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সে সব অভিযোগ স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশের দাবি। এর পরেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই অভিযুক্ত যুবকের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পেশায় দিনমজুর। রায়ডাক নদীতে বালি-পাথর তোলার কাজ করে সে। অভিযোগ, শিশুটিকে নিজের ফাঁকা বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য শিশুটির শ্বাসরোধ করে খুন করে এবং দেহটি রায়ডাক নদীর চরে বালিতে পুঁতে দেয়। ভোররাতে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের স্ত্রী এবং দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। নির্যাতিতা শিশুকন্যাটি অভিযুক্তের দুই ছেলের খেলার সঙ্গী। ঘটনার দিন তার স্ত্রী দুই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন।
নির্যাতিতা ও নিহত শিশুটির বাবা পেশায় দিনমজুর। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে খেয়ে খেলতে বের হল। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও সে বাড়ি না ফেরায় খুঁজতে বের হই। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। রাতে অভিযুক্তের স্ত্রী একজোড়া চটি নিয়ে এসে জানান, তাঁদের ঘরে ওই চটি জোড়া পড়েছিল। সেটাই পুলিশকে জানাই।’’ পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তের কাছে চটি জোড়ার ব্যাপারে জানতে চায়। কিন্তু প্রথমে তার কাছ থেকে অসংলগ্ন উত্তর পাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। এর পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বারবিশা পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। টানা জেরায় সে এরপর সব স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরপর রাত আড়াইটা নাগাদ অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ নদীর চরে যায়। সেখানেই শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশী শৈলেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তের ফাঁসি ছাড়া আর কোনও শাস্তি চাই না আমরা।’’ আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘তদন্তকারী অফিসারকে সাতদিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে বলা হয়েছে।’’