প্রতীকী চিত্র
উত্তরবঙ্গ তো বটেই গোটা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ইয়েলো ফিভার ভ্যাকসিন’ দেওয়ার কেন্দ্র হিসাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নাম বছরখানেক আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। আফ্রিকার দেশগুলো বা বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার আগে এই প্রতিষেধক নেওয়া বাধ্যতামূলক। অথচ কোন তহবিল থেকে, কী ভাবে প্রতিষেধক কেনা হবে সেই নির্দেশ না মেলায় তা চালু করা যায়নি। ফলে এই এলাকাগুলো থেকে বিদেশযাত্রার আগে প্রতিষেধক না নিতে পেরে দুর্ভোগে পড়ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের কলকাতা যেতে হচ্ছে ইয়েলো ফিভারের প্রতিষেধক নিতে। অথচ ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রতিষেধক নেওয়ার কেন্দ্র হিসেবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নাম পাওয়া যাচ্ছে। তা দেখেই অনেকে এখানে এসে হাজির হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের ফিরে যেতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সমস্যা কোথায়? হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় বা অন্যত্র এই প্রতিষেধক টাকা দিয়েই নিতে হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে সরকারি হাসপাতালে কোনও পরিষেবার জন্য টাকা নেওয়া হয় না। সে ক্ষেত্রে প্রতিষেধকের অর্থ কোনও তহবিল থেকে খরচ করা হবে? সেই প্রশ্নের মীমাংসা এখনও হয়নি। তার জেরে কাজ এগোয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারের তরফে নির্দেশ পেলেই কাজ শুরু করা যাবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘প্রতিষেধকের টাকা প্রার্থীদের থেকে নেওয়া হলে তা রোগী কল্যাণ সমিতিতে জমা রেখে সেখান থেকে প্রতিষেধক কেনা যেত। কিন্তু সেই রকম সরকারি নির্দেশ পেলে তবেই সেটা সম্ভব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা নির্দেশ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, ভারতে ইয়েলো ফিভার বা পীত জ্বর নেই। কিন্তু আফ্রিকা মহাদেশের মতো যে সমস্ত এলাকার দেশগুলোতে এ রোগ সংক্রমণ রয়েছে সেখান থেকে যাতে এ দেশে না ছড়ায় তাই ওই সমস্ত দেশে যাওয়ার আগে যাত্রীদের ওই প্রতিষেধক দেওয়া হয়। ওই সমস্ত দেশ থেকে যাঁরা ভারতে আসবেন তাঁদেরও নিতে হয়। শিলিগুড়ির বাসিন্দা অর্কদীপ চক্রবর্তী মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটি জাহাজ কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছেন। এ মাসেই তাঁকে যেতে হবে। সেই জন্য নেট দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মেডিক্যাল থেকে জানানো হয় এখনও চালু হয়নি। কলকাতায় যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করতে হল।’’