ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসছে জল। তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি ভুটান পাশাখা সীমান্তের খোকলাবস্তিতে। ছবি: নিজস্ব চিত্র
অনবরত বৃষ্টি হয়েই চলেছে। কখনও গতি কমছে, কখনও বাড়ছে। ভুটান পাহাড়েও কিছুটা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর তার জেরেই জল বাড়ছে নদীগুলিতে। কোচবিহারে মানসাই ও রায়ডাক নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। তিস্তাতেও জারি হলুদ সঙ্কেত। তোর্সা নদীতে কোনও সঙ্কেত না থাকলেও জল এখনও কমতে শুরু করেনি। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাঁদের জন্য ত্রাণশিবির খুলে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছেনদী ভাঙনও। কোচবিহারজেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অসংরক্ষিত কিছু এলাকায় জল ঢুকেছে। সংরক্ষিত এলাকায় কোনও সমস্যা নেই। কোথাওনদী বাঁধের ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা জল নামার পরেই বোঝা যাবে।’’
দিন কয়েক ধরেই কোচবিহারে ধারাবাহিক বৃষ্টি চলছে। এখনও পর্যন্ত দু’হাজার মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলায়। যা রেকর্ড। সাধারণত জুনমাসের বৃষ্টি হাজার মিলিমিটারের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণমৌসম সেবা কেন্দ্র, বৃষ্টিপাতের জন্য লাল ও কমলা সতর্কতা জারিকরেছে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২২ জুন পর্যন্ত কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে ভুটান পাহাড়েও একই ভাবে বৃষ্টি চললেনদীগুলিতে আরও জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোচবিহারের মহকুমাশাসক রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তেমন হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন তুফানগঞ্জ রায়ডাক নদীর জল বিপদসীমার উপর নিয়ে বইছে। গদাধর, কালজানি, সংকোশ, তোর্সা, রায়ডাক-২ নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তুফানগঞ্জে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৮.৬০ মিলিমিটার। রায়ডাক-১ নদীতে বৃহস্পতিবার রাত দু’টো নাগাদ হলুদ সঙ্কেত জারি হয়। বলরামপুরে শোলধুকড়ি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বিডিও দেবঋষি বন্দ্যোপাধ্যায় ওই এলাকায় যান। অপরদিকে, তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু সংকোশ ও রায়ডাক নদী পরিদর্শন করেন। ওই ব্লকের বড় লাউকুঠি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের প্রবল বৃষ্টিতে তুফানগঞ্জ নাকাকাটিগাছের কামাতফুলবাড়ি চড় এলাকায় জলমগ্ন হয়ে পরে দশটি পরিবার। তাঁদের ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের সন্তোষপুর এলাকার গাদাধর নদী এবং ধলপল গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়ডাক ও গদাধর নদীর জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ায় কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।