প্রতীকী ছবি।
নাগরিক পঞ্জি (এনআরসির) আতঙ্কে বেশ কিছুদিন ধরে হন্যে হয়ে পুরনো দলিল খুঁজছিলেন। না পেয়ে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার ভাগলপুরের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ (৬৫)। এমনটাই দাবি মৃতের পরিবারের।
গত শনিবারের ঘটনা। অসুস্থ আব্দুলকে প্রথমে স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিহারের কাটিহারে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে রবিবার রাতে মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এনআরসি আতঙ্কে ব্রেন স্টোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্থানীয় এবং পরিবার সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে জমির কাগজ খুঁজছিলেন। পুরনো জমির খোঁজে গত সপ্তাহে বিহারের পূর্ণিয়া গিয়েছিলেন। কিন্ত সেখানে কোনও খোঁজ না পেয়ে হতাশায় ছিলেন। মৃতের বড়ছেলে তাঞ্জুর আলম বলেন, ‘‘বাবা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছিলেন। বাবাকে আমরা অনেকবার বুঝিয়েছিলাম। বাবা দাদুর পুরনো দলিল খুঁজছিলেন। কিন্ত কাগজপত্রের কোনও হদিশ পাননি।’’ পরিবার সূত্রের খবর, লতিফের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা এলাকায়। সেখানে আজ থেকে ৪০ বছর আগে বন্যার জেরে বাড়িঘর ভেসে গেলে লতিফ আশ্রয় নেন বিহারের কাটিহারে। পরে চাকুলিয়ার নিজামপুরে বিয়ে করে সংসার পাতেন। সেখানে জিনিস ফেরি করে সংসার চালাতেন।
পরিবার জানিয়েছে, এনআরসি আতঙ্কে তাঁর রক্তচাপও বেড়ে গিয়েছিল। স্থানীয়দেরও অভিযোগ, এনআরসি নিয়ে আলোচনার পর থেকেই লতিফের আতঙ্ক বেড়ে গিয়েছিল। এমন ঘটনা প্রকাশ্য আসতে রাজনৈতিক মহলে তরজা শুরু হয়েছে। চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক দলের বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) এদিন দাবি করেন, ‘‘পরিবার এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আব্দুলের এনআরসির আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে এনআরসির আতঙ্কে একাধিক মানুষের মৃত্যুর খবরে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি।’’ বিধায়ক এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার এবং বিজেপি এনআরসি নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতরে ভয় ভীতি ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ মৃধা বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আমার জানা নেই। এখন তো যে কোনও মৃত্যুকে বিরোধীরা এনআরসি আতঙ্ক বলে চালিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।’’