সঙ্ঘের শিবির চলছে বন্ধ দরজার পিছনে

জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ায় সারদা শিশুতীর্থ স্কুলে সাতদিনের এই আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। স্কুলে ঢোকার লোহার দরজা বন্ধ করে ভিতরে চলছে প্রশিক্ষণ।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৫
Share:

—ফাইল ছবি

নতুন ‘প্রচারক’ গড়তে কিশোর থেকে যুবক, সবমিলিয়ে দু’শো জনকে একসঙ্গে জলপাইগুড়িতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)।

Advertisement

জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ায় সারদা শিশুতীর্থ স্কুলে সাতদিনের এই আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। স্কুলে ঢোকার লোহার দরজা বন্ধ করে ভিতরে চলছে প্রশিক্ষণ। সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকরা সেই সদর দরজায় পাহারাও রয়েছেন। লাঠিখেলা-সহ নানা কসরত শেখানো হচ্ছে সেখানে। সেই সঙ্গে দেশপ্রেম, হিন্দুত্বের পাঠও চলছে দিনরাত। সঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিবছরই এমন শিবির হয়। তবে এ বছর প্রশিক্ষণ নিতে আসা তরুণদের সংখ্যা বেশি। গত বছর একশোর কিছু বেশি জন প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। এ বছর সেই সংখ্যা দুশো ছুঁয়েছে। গত লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে বিজেপির বিশাল জয়ের পর, সঙ্ঘ যে জলপাইগুড়িতে শাখা বিস্তার করতে চলেছে তার-ই ইঙ্গিত রয়েছে এই শিবিরে। স্কুল ছাত্ররাও এ বারের শিবিরে রয়েছে বলে সূত্রের খবর। চা বাগান এলাকার জনজাতি যুবকেরা যেমন রয়েছেন, তেমনিই নেপালিভাষী এবং রাজবংশীরাও রয়েছেন সেখানে।।

গত ১৫ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে। তবে শিবির থেকে দূরে রাখা হয়েছে বিজেপি নেতাদের। তাঁদের শিবিরে আসতে বারণ করা হয়েছে। সঙ্ঘের থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজন হলে তাঁরা বিজেপি নেতাদের ডেকে নেবেন। যেমন শিবিরে পানীয় জলের সরবরাহের জন্য জেলা বিজেপির এক নেতার সহায়তা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এক বিজেপি নেতার কথায়, “দলে নতুন যোগ দেওয়া সকলেই সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ খুঁজছেন। তাঁদেরই অনেকে শিবিরে এসে সঙ্ঘের প্রচারকদের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করেছিলেন। তা জানতে পেরেই, সঙ্ঘ তাঁদের প্রবেশাধিকারে নিষেধ করে দিয়েছে।” বিজেপি সূত্রের খবর, প্রশিক্ষণ শিবিরে কারা যোগ দিয়েছে, সে তথ্য বিজেপি নেতাদের কাছে থাকুক, সঙ্ঘের প্রচারকরা তা চাইছেন না। সোমবার দুপুরে প্রশিক্ষণ শিবিরে গেলে সেখানে কেউ কথা বলতে চাননি। পরে সঙ্ঘের ধর্ম জাগরণ সমন্বয়ের উত্তরবঙ্গের সংযোজক দেবাশিস লালা বলেন, “পনেরো থেকে পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত সকলেই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে পারেন। শারীরিক এবং বৌদ্ধিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ির শিবিরে এই জেলার স্বয়ংসেবকরাই রয়েছেন।”

Advertisement

গ্রামে-শহরে প্রচারক ছড়িয়ে সঙ্ঘ অসহিষ্ণুতার বীজ ছড়াচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটে সঙ্ঘের প্রচারকরা মানুষদের ভুল বুঝিয়েছেন বলে দাবি করলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। তাঁর মন্তব্য, “জেলায় শিবির করে প্রচারক তৈরি হচ্ছে। এখানে যাতে ধর্মীয় জিগির তোলা না হয়, প্রশাসনকে বলব সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement