নির্দেশ: পুরসভার নোটিশ। নিজস্ব চিত্র
সরকারি হোক বা বেসরকারি, শহর জুড়ে চলছে অগুন্তি নির্মাণকাজ। বাইরের জেলা এমনকী ভিন্রাজ্য থেকেও শ্রমিকরা সেসব কাজে আসছেন। তাঁরা কারা, কী তাঁদের পরিচয়, অতীতে কোনও অপরাধের অভিযোগ রয়েছে কিনা সেসব কিছুই জানে না পুলিশ-প্রশাসন। সোমবার রাতে আনন্দপাড়ায় নাবালিকাকে হাত-মুখ বেঁধে ঝোপে ফেলে রাখার ঘটনায় ভিন্জেলা থেকে আসা ঠিকা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠার পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহরে।
বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, নির্মাণ শ্রমিক সেজে কারা আসছে তা দেখুক প্রশাসন। আনন্দপাড়ার ঘটনার পরে হাতগুটিয়ে বসে নেই প্রশাসনও। জলপাইগুড়ি পুরসভা থেকে এ দিন সব ঠিকাদার সংস্থা এবং ব্যক্তিকে নোটিশ ধরানো হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, বাইরে থেকে যে শ্রমিকদের কাজে আনা হচ্ছে তাঁদের সঠিক পরিচয় যাচাই করতে হবে। তাদের যথাযথ পরিচয়, অতীতে কোনও অপরাধের অভিযোগ রয়েছে কিনা তা জেনে তবেই কাজে নিয়োগ করা হবে, এমনটাই চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদার সংস্থার থেকে শ্রমিকদের তালিকা জোগাড় করে তা পুলিশকে দিয়ে যাচাই করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। আনন্দপাড়ার ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলেই পুরসভার জলাধার তৈরির কাজে এসেছিল।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “আনন্দপাড়ার ঘটনা আমাদের কাছে সর্তকবার্তা। সে কারণেই পুরসভার সব এজেন্সিকে নোটিশ ধরানো হয়েছে।’’ কিন্তু শহরে অন্য অনেক সরকারি, বেসরকারি সংস্থার নির্মাণ চলছে। পুরসভার ঠিকাদার এজেন্সির সঙ্গে তাঁরা কেউ যুক্ত নন। সেই বিশাল ক্ষেত্রকে কি করে নজরদারির আওতায় আনা যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারাই। একটা হিসেবে শহরে এই মুহূর্তে অন্তত চারশো বাইরের শ্রমিক রয়েছে। তাঁদের পরিচয় জানার পরিকাঠামো জেলা পুলিশের আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, “বাইরে থেকে কারা শহরে এসে থাকছে তাদের পরিচয় গতিবিধি জানার চেষ্টা চলছে। বাসিন্দাদের সাহায্য ছাড়া এমন সম্ভব নয়।’’ সোমবার রাতে আনন্দপাড়ার নির্মীয়মাণ জলাধারের পিছনে ঝোপ থেকে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় এক ছাত্রী উদ্ধার হয়। নাবালিকার অভিযোগ, নির্মাণ শ্রমিকেরা তার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। ওই শ্রমিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।