অপেক্ষায়: লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকার খোঁজ নিতে বংশীহারি বিডিও অফিসে হালিমা খাতুন ও আঞ্জুয়ারা বেগম। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সকাল থেকে বিডিও অফিসের সামনে হাপিত্যেশ করে বসে আছেন আঞ্জুয়ারা, হালিমারা। এ দিন বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি। তাই বিডিও অফিস বন্ধ। কিন্তু তার পরেও আশা, যদি কোনও সরকারি আধিকারিকের দেখা পান। কারণ, তিন মাস হয়ে গেল এখনও যে লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা ঢোকেনি ওঁদের।
বংশীহারি বিডিও অফিসের সামনে সরকারি ছুটি হোক বা রবিবার, এমন কোনও দিন নেই যে লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য হত্যে দিয়ে পড়ে নেই মহিলারা। ব্লকের দূরদূরান্তের গ্রামগঞ্জের মহিলারা কোলে ছেলেপুলে নিয়ে প্রতিদিন আসছেন এই প্রকল্পের টাকার খোঁজ নিতে। এ দিনই জোড়দিঘির হালালপুর থেকে ব্লকে এসেছিলেন হালিমা খাতুন ও আঞ্জুয়ারা বেগম। ওঁদের বক্তব্য, গ্রামের প্রতিবেশী প্রায় সব মহিলারাই তিন মাস ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা পাচ্ছেন।
হালিমার বয়ান, ‘‘আমার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড আছে। সব কাগজপত্র সবার আগে জমা দিয়েছি। কিন্তু এখনও টাকা পাইনি। বর আমার দিনমজুর। এই টাকা পেলে সংসারে একটু উপকার হত।’’
আঞ্জুয়ারাও বলেন, ‘‘একবার ব্যাঙ্কে যাচ্ছি। একবার বিডিও অফিস। একবার পঞ্চায়েত। ঘুরেই যাচ্ছি। কিন্তু আজও টাকা পেলাম না।’’
ছুটির দিনে কেন এলেন? ওঁদের দাবি, বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে এ দিন আসতে বলেছিল। কী সমস্যা আছে তা দেখবে বলেছিল। কিন্তু এসে দেখেন সেটাও বন্ধ। প্রায় ১০ কিমি উজিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে থেকে হতাশায় ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তাঁরা।
ব্লক অফিসের দাবি, অনেক সময় ব্যাঙ্কের টেকনিক্যাল ভুলে টাকা ঢুকছে না। প্রথম দফায় রাজ্য থেকে ব্লকে এমন প্রায় সাড়ে সাতশো আবেদনকারীর নাম পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে প্রায় অধিকাংশের সমস্যা মিটিয়ে টাকা দেওয়া হয়েছে।
বিডিও সুদেষ্ণা পাল বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের আইএফসি নম্বর পালটে গিয়েছে। সেখান থেকে সমস্যা হচ্ছে অনেকের। আবার ফাইনাল ভেরিফিকেশনে দেখা যাচ্ছে অনেকে প্রয়োজনীয় কাগজ দিতে পারেনি। যাঁদের এমন সমস্যা হচ্ছে তাঁদের লিস্ট রাজ্য থেকে পাঠায় আমাদের। আমরা সেগুলো ঠিক করে দিলে টাকা পান অনেকে।’’ এঁদের নামও সেই তালিকায় রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সুদেষ্ণা।