Tourists

ঘরে ফেরার কথায় ভিজে গেল চোখ

একই অভিব্যক্তি ছিল সব যাত্রীদের মুখেচোখেই। কাজে-কর্মে বা বেড়াতে এসে লকডাউনে  শিলিগুড়ি এবং সংলগ্ন এলাকায় আটকে পড়েছিলেন এমন দেড়শো জন এ দিন ফিরে গেলেন দিল্লি থেকে আসা ডিব্রুগড়গামী ট্রেনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৬:৩০
Share:

হাত বাড়িয়ে: এনজেপি স্টেশনে দেওয়া হচ্ছে স্যানিটাইজ়ার। নিজস্ব চিত্র

বাড়ি ফেরার কথা বলতে বলতেই মাস্কে ঢাকা মুখের অভিব্যক্তি বদলে গেল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বাড়ি ফেরার আনন্দে চোখ ভিজে গেল অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা রুবি ঘোষের। বুধবার এনজেপি থেকে অসমের দিকে ট্রেনে ওঠার জন্য ছোট্ট মেয়ে অংশিতাকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার আনন্দে অংশিতার মুখেও হাসি। একই অভিব্যক্তি ছিল সব যাত্রীদের মুখেচোখেই। কাজে-কর্মে বা বেড়াতে এসে লকডাউনে শিলিগুড়ি এবং সংলগ্ন এলাকায় আটকে পড়েছিলেন এমন দেড়শো জন এ দিন ফিরে গেলেন দিল্লি থেকে আসা ডিব্রুগড়গামী ট্রেনে।

Advertisement

এ দিন অধিকাংশ যাত্রী অভিযোগ করেছিলেন, স্টেশনে আসার জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন তাঁরা পাননি। সেই কারণে সময়ে স্টেশন পৌঁছতে প্রবল অসুবিধেয় পড়তে হয় তাঁদের। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, স্পেশ্যাল ট্রেনের যাত্রীদের তথ্য রাজ্য সরকারের হাতে থাকছে না তাই বাসের ব্যবস্থা করতে সমস্যা হচ্ছে। এ দিন ওই ট্রেনে এসে এনজেপি নামেন বেশকিছু যাত্রী। স্টেশনে নামার পরে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে সকলকে।

মঙ্গলবার থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে স্পেশ্যাল যাত্রী ট্রেনের যাতায়াত। বুধবার প্রথম এনজেপিতে এসে পৌঁছয় দিল্লি-ডিব্রুগড় এসি স্পেশ্যাল। রেল সূত্রে দাবি, ৬৬ জন যাত্রী এ দিন এনজেপি নেমেছেন। আর এনজেপি থেকে অসমের দিকে গিয়েছেন ১৪৫ জন। এনজেপি স্টেশন অধিকর্তা রাজীব ঝা বলেন, ‘‘প্রত্যেক যাত্রীর নাম লিখে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।’’ এ দিন ট্রেন থেকে নামার পরে যাত্রীদের প্রথমে স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকা ব্যাগ জীবাণুমুক্ত করা হয়। তারপরে তাঁদের প্রত্যেককে স্ক্রিনিং করে নাম-ঠিকানা লেখা হয়।

Advertisement

বুধবার এনজেপিতে এসে পৌঁছন দার্জিলিঙের তাকদার বাসিন্দা বৃষ্টি গুরুং। তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন নার্স। দিল্লি গিয়েছিলাম ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রশিক্ষণের জন্য। আমি ও আমার কয়েকজন বন্ধু আটকে পড়ি।’’ জিটিএ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করা হয় স্টেশনে। তারপরে বাসে করে বাড়ি পৌঁছনো হয় তাঁদের। যদিও এই সুবিধে উত্তরবঙ্গের অন্য কোনও যাত্রী পাননি বলে অভিযোগ। দিল্লির এমসে পায়ের অস্ত্রোপচার করে ফিরেছেন বিন্নাগুড়ির বাসিন্দা সৌমি নায়েক। তাঁর বন্ধু অনীত শর্মা তাঁকে হুইলচেয়ারে বাইরে বের করে আনেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে প্রচুর দরদাম করে তাঁদের গাড়ি ঠিক করতে হয়।

দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, এরকম যাত্রীদের জন্য এনজেপিতে বাসের ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement