মৃতার নাম ব্রজবালা রায় (৫৯)
বুধবার গভীর রাতে আগুন লাগার আতঙ্কে হুড়োহুড়িতে চিকিৎসাধীন এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁর পরিজনদের। তাঁর নাম ব্রজবালা রায় (৫৯)। বাড়ি অসমের ধুবড়ির ছোটগুমায়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আগুন লাগেনি। একটি অক্সিজেনের সিলিন্ডারের মুখ আচমকা শব্দ করে খুলে যায়। ওই মহিলার মৃত্যু শ্বাসকষ্টজনিত রোগেই হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। তবে ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার কেন নিয়মিত দেখভাল করা হয় না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিয়মিতই তা দেখা হয়, তবে সেই রাতে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ১৭০। রয়েছে শিশু, পুরুষ এবং মহিলা বিভাগ। এই হাসপাতালে তুফানগঞ্জ মহকুমার মানুষ ছাড়াও অসম থেকে অনেকে আসেন। প্রায় সব সময় রোগীর চাপ থাকে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে।
সেই রাতে সাড়ে এহারোটা নাগাদ হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে যায়। রোগী ও রোগীর পরিজনের মধ্যে আগুন লাগার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মহিলা এবং শিশু বিভাগের রোগী এবং পরিজনরা হুড়োহুড়ি করে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে আসেন। হাসপাতালের বাইরেও ছড়ায় চাঞ্চল্য। ভিড় জমতে থাকে হাসপাতালে। অভিযোগ, হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে মারা যায় চিকিৎসাধীন ব্রজবালাদেবী। ঘটনাস্থলে আসে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। আসে তুফানগঞ্জ দমকলের দু’টো ইঞ্জিন।
মৃতার মেয়ে শান্তি রায় জানায়, রাতে প্রায় সব রোগী ঘুমোচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির লোক হাসপাতালের বাইরে ছিলেন। সাড়ে এগারোটা নাগাদ হঠাৎ করে মহিলা বিভাগে থাকা একটি সিলিন্ডার ফেটে যায়। সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লেগেছে সন্দেহে শিশু বিভাগ এবং মহিলা বিভাগের রোগী এবং পরিজনরা দৌড়োদৌড়ি করে বাইরে বেরিয়ে আসে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার মা অন্য রোগীদের মতো দৌড়ে বাইরে যেতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে মারা যান।’’
তুফানগঞ্জ দমকল দফতরের আধিকারিক শিবানন্দ বর্মা বলেন, ‘‘হাসপাতালে আগুন লেগেছে খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে আগুন দেখতে পাইনি।’’ তবে তিনি জানান, অক্সিজেন সিলিন্ডারের ছিপি খুলে গেলে রোগীরা আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করছিলেন। হাসপাতালের সুপার মৃণালকান্তি অধিকারী বলেন, ‘‘অক্সিজেন সিলিন্ডারের একটি কক খুলে গিয়েছিল। তাতেই আতঙ্ক ছড়ায়। তবে ওই মহিলার মৃত্যু দৌড়োদৌড়ি অথবা আতঙ্কে হয়নি। মহিলা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ নিয়ে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সেই রোগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’’ মৃণালবাবু বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত সব কিছুর দেখভাল করি। সিলিন্ডার নিয়েও আমরা সতর্ক। ওই রাতের ঘটনাটা একটা ছোট দুর্ঘটনা।’’