প্রতীকী ছবি।
গত বছর এই দিনটিতেই কেউ পেয়েছিলেন সাইকেল। কারও মিলেছিল বার্ধক্য ভাতা। দু’বছরের মাথায় সেই দিনটিকে কার্যত ভুলেই গেল প্রশাসন। জেলায় কোনও অনুষ্ঠান তো নয়ই, সাবেক ছিটমহলগুলিতেও প্রশাসনের কর্তাদের কারও দেখা মিলল না। মঙ্গলবার তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেছেন, “অনুষ্ঠান করার কোনও নির্দেশ পাইনি।”
দু’বছর আগে ৩১ জুলাই রাত ১২টায় ছিটমহল বিনিময় হয়। তা নিয়ে দুই বাংলার মানুষ মাঝরাত থেকেই উৎসবে মেতে ওঠেন। পরদিন, ১ অগষ্ট প্রশাসনের তরফে জাতীয় পতাকা উত্তোলন থেকে শুরু করে নানা অনুষ্ঠান হয়। সেই সময় থেকে সাবেক ছিটমহলগুলিতে উন্নয়ন শুরু করার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। তার পর যত দিন গিয়েছে উন্নয়ন কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
এক বছরের মাথায় সেই অভিযোগ নিয়েই কোচবিহার শহরে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ঘটা করে ছিটমহল বিনিময়ের এক বছর পূর্তি উৎসব পালন হয়। সেখানে মন্ত্রী-নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসনের বহু আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। গাড়িতে করে ছিটমহলগুলি থেকে বাসিন্দাদের এনে নানা প্রকল্পে তাঁদের সহায়তা করা হয়। এ বারে অবশ্য কোথাওই তেমন অনুষ্ঠান করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই মশালডাঙা থেকে শুরু করে পোয়াতুরকুঠি, বাত্রীগছ-সহ সমস্ত জায়গাতেই ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। বেশ কয়েক জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠান হয়নি বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। কবীর হোসেন, জয়নাল আবেদিনরা বলছেন, “কোনও অনুষ্ঠান হলে অনেক ক্ষোভ, বেদনার কথা প্রকাশ্যে চলে আসত। তাই এ বারে আর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি।” জিয়াউল ইসলাম অভিযোগ করেন, করলা দ্বিতীয় খণ্ড সাবেক ছিটমহল কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে। ওই এলাকায় এখন কোনও উন্নয়ন হয়নি। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় রাস্তা, বিদ্যুৎ কিছুই হয়নি। মানুষ অন্ধকারে আছে।” ছিটমহল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বর্তমানে বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “সাবেক ছিটমহলগুলিতে উন্নয়নের নামে লুঠ চলছে। সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। তাই এ বারে প্রশাসন অনুষ্ঠান করার ঝুঁকি নেয়নি।”