ফাইল চিত্র।
দার্জিলিঙের ক্ষমতা দখলের পর এবার দলীয় পতাকা নিয়েও পুরোদস্তুর টানাপড়েন শুরু হল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায়। গত ২০১৭ সালে পাহাড় ছাড়ার পর থেকে বিমল গুরুং এবং তাঁর অনুগামীরা দলীয় পতাকায় গুরুংয়ের মুখের ছবি দেওয়া পতাকা ব্যবহার করন। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে বিজেপি পাহাড়ে ছেয়ে যায় গুরুংয়ের ছবিযুক্ত পতাকা। দলীয় ক্ষমতার টানাটানিতে এ বার ছবি-যুক্ত সেই পতাকা ব্যবহার ছাড়তে চলেছেন স্বয়ং গুরুং।
বুধবার দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠকের পর নেতা-কর্মীদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন গুরুং। বলা হয়েছে, ২০০৭-এ দল গঠনের সময়কার পতাকাই ব্যবহার করা হবে। ১ জানুয়ারি থেকে পুরনো পতাকার ব্যবহার বাধ্যতামূলক বলে গুরুং মোর্চা সভাপতি হিসেবে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।
সম্প্রতি গুরুংয়ের বিরুরোধী গোষ্ঠীর নেতা বিনয় তামাং, অনীত থাপারা পতাকা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কার্শিয়াঙে অনীত বলেছিলেন, ‘‘নিজের মুখ বসিয়ে পতাকা তো গুরুংয়ের দলের। ওটা মোর্চার পতাকা নয়।’’
গুরুংয়ের থেকে আলাদা হওয়ার পর থেকেই বিনয়-অনীতেরা দলের পতাকাই ব্যবহার করে আসছেন। ২৬ ডিসেম্বর গুরুংয়ের খাসতালুক সিংমারি নর্থ পয়েন্ট এলাকায় পদযাত্রা করেছেন অনীত। দলীয় সদর দফতর-সহ এলাকায় মোর্চার পতাকায় মুড়ে দেওয়া হয়। এটাই দলের পতাকা বলে বাড়িতে বাড়িতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। গুরুংপন্থীরা চিন্তায় পড়েন। বিশেষত, আগামী দিনে নির্বাচনের কমিশনের কাছে দলের পতাকা দেখিয়ে অনীত-বিনয়েরা নতুন করে দাবি জানাতে পারেন বলে গুরুংপন্থী নেতারা ভয় পাচ্ছিলেন।
দলীয় সূত্রের খবর, গুরুং এ দিনের বৈঠকে নেতাদের জানান, ২০০৭ সালের ৭ অক্টোবর দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে সভা থেকে দল তৈরি হয়। নির্বাচনে কমিশনে রোশন গিরি ও বিমল গুরুংয়ের নামে তা নথিভুক্ত রয়েছে। সবুজ রঙের মধ্যে সূর্য, মাঝের সাদায় পাহাড় এবং নীচের হলুদ রঙের মধ্যে নেপালি গোর্খাদের জোড়া খুকুরি দিয়ে পতাকা তৈরি করা হয়। তা সরকারি সমস্ত জায়গায় রয়েছে। তাঁর ছবির পতাকা ভালবাসার জায়গা থেকে ব্যবহার হলেও দলের মূল পতাকা পুরনোটাই হবে বলে গুরুং জানান। তিনি নেতাদের জানান, কাল, ১ জানুয়ারি থেকে দলীয় দফতর, গাড়ি, এলাকায় বাড়ির ছাদে, জমিতে ব্যবহার করতে হবে। ছবি দেওয়া পতাকা ব্যবহার হলেও তা কম করতে হবে।
পতাকা বদল নিয়ে বিনয়পন্থীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তাঁদের কেন্দ্রীয় সমিতির এক নেতার কথায়, ‘‘সাড়ে তিন বছর ঠান্ডা এলাকার বাইরে থেকে মাথাটা নষ্ট হতে বসেছে। মানুষের সমর্থন তো পাচ্ছেন না। তাই আমি সভাপতি, আমার দল প্রমাণ করতে উনি মরিয়া।’’