—প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি জাতীয় সড়কের পাশে বলরামজোত লাগোয়া এলাকার একটি বোতলজাত পানীয় জলের কারখানায় দুই দুষ্কৃতীর চার রাউন্ড গুলি চালানোর ঘটনাকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। সোমবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এনজেপি থানার আমবাড়ি ফাঁড়ির আকারিগছ এলাকার ঘটনা। বছর দশেক ধরে কারাখানাটি এলাকায় রয়েছে। এমন হামলা বা হুমকির ঘটনা আগে ঘটনি বলে মালিক পক্ষের দাবি।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীরা কারখানার ভিতরে দু’রাউন্ড এবং বাইরে গেট দিয়ে পালানোর সময় আরও দু’রাউন্ড গুলি চালায়। রাতে কারখানায় থাকা কর্মীরা অন্ধকারে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচান। অভিযোগ, কোনও লুট, ছিনতাই বা অপহরণের চেষ্টা না করলেও কারখানার ভিতরে ঢুকে রাতের ডিউটিতে থাকা কর্মীদের গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছে দুই দুষ্কৃতী। দু’জনের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা থাকায় কেউ তাদের চিনতে পারেননি বলেও দাবি। কারখানাটি মালদহের এক ব্যবসায়ীর। ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে সংস্থা তরফে শিলিগুড়ি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা এবং এলাকার কারাখানার মালিকেরা তোলাবাজি এবং দাদাগিরির আশঙ্কাও করছেন। শিলিগুড়ি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই এনজেপি এবং আমবাড়ির ফাঁড়ির পুলিশ অফিসারেরা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে কারখানায় থাকা ৫ জন কর্মী এবং এক জন ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা সকলে কারাখনা চত্বরের মধ্যেকার ঘরেই থাকেন। দুষ্কৃতীদের চালানো গুলির খোলও উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু ঠিক কেন এমন হামলা, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন, কোনও কর্মীর ছাঁটাই বা কাজ থেকে বসানোর জেরে গোলমাল বা এলাকার কোনও দল ভয় দেখিয়ে দাদাগিরি করে তোলাবাজি করার চেষ্টা শুরু করছে কি না, তা-ও তদন্তকারী অফিসারেরা দেখছেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে আমরা তদন্ত করছি। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, কারাখানার মালিক শৈলেশ বিশ্বাস বছর চারেক আগে বোতলজাত পানীয় জলের কারাখানাটি কিনেছেন। আগে জেলার অন্য একজন এর মালিক ছিলেন। উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বোতলজাত জল সরবরাহ করা হয়। শৈলেশবাবু মালদহে থাকেন। তাঁর শ্যালক প্রসেনজিত বালা এখানে থেকে কারখানাটি দেখভাল করেন। তিনি বলেন, ‘‘রাত ১১টা নাগাদ কারখান চত্বরে লোক ঢুকেছে মনে হচ্ছিল। হঠাৎ মুখ ঢাকা, হাতে পিস্তল, এমন দু’জনকে দেখতে পাই। জানতে চাই, কে আপনারা? জবাব আসে, পাহারাদার। পরে হঠাৎ করে দু’টি গুলি চালে। কোনওক্রমে আমরা প্রাণ বাঁচাই।’’ কারখানার লোকজনের সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও কিছুক্ষণ পরে ফের দু’রাউন্ড গুলির শব্দ হয়। তার পরে অন্ধকারে মিলিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী।
আতঙ্কিত মালিকপক্ষ নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সুরিজৎ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সুরজিৎ বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা না হলে ব্যবসীয়রা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন।’’