সেবক রোড।
নতুন বাজেটে সেবক-রংপো রেল রুটের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ৬০৭ কোটি টাকা। চতুর্থ কিস্তি হিসেবে বরাদ্দ হয়েছে এই টাকা। ৪০৮৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ৫৬৪ কোটি টাকা। আপাতত কাজ শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে ২০২২ সালে।
রেলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই রুটে এখনও পর্যন্ত মাত্র কুড়ি শতাংশ কাজ হয়েছে। এ দিকে প্রকল্পের গতি একেবারেই কম বলে অভিযোগ। ফলে নির্ধারিত সময়সীমার ভিতরে আদৌ কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে রেলেরই একটি সূত্রের দাবি। এ বার সার্বিকভাবে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের বাজেট বরাদ্দ কমেছে।
এর আগে জমি জটের কারণ এই প্রকল্পে দু’বার কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়েছে। কিন্তু এ বারও কেন রেল ধীরগতিতে ওই প্রকল্প চালাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে রেলকর্তাদের দাবি, যেমন যেমন কাজ হচ্ছে। সেরকম বরাদ্দ মিলছে। সেবক, রিয়াং, গাইখোলা, তিস্তাবাজার, মেলি হয়ে রংপো পর্যন্ত লাইন পাতার কাজ চলছে।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘টাকা কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। জমি জট প্রায় কাটিয়ে তুলেছি আমরা। একবার সেগুলি মিটে গেলে কাজে দ্রুত হবে। তবে এখনও পর্যন্ত কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়সীমা মেনেই চলছে।’’ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তাদের দাবি, প্রস্তাবিত ওই লাইনে এখনও ছোট কয়েকটি জমির সমস্যা রয়েছে। তা শীঘ্রই কাটিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। কিছুদিন আগেই কালীঝোরার কাছে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে রেল লাইন পাতার কাজে আনা একটি দামি যন্ত্র জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তাতেও কিছুটা কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। রেলকর্তাদের আশ্বাস, নতুন মেশিন এনে কাজ আবার শুরু করার নির্দেশ ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকালীন সেবক-রংপো রুটে রেলের প্রস্তাব পাশ হয়। কিন্তু ২০১৫ সাল পর্যন্ত জমি জটের কারণে কাজই শুরু করতে পারেনি উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল। ২০০৮-০৯ সালে নেওয়া ওই প্রকল্পে লাইন তৈরির সম্ভাব্য খরচ ছিল ১৩৩৯.৪৮ কোটি। তা ২০১৫ সালে বেড়ে হয়ে যায় তিনগুণেরও বেশি।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সেই সময় পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনেই এই লাইন তৈরির কথা হয়। এতে পর্যটনে তো সুবিধা হবেই তার চেয়েও বড় কথা, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ওঠাপড়ার প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষার বিষয়টই বেশি জরুরি। সেটা কেন্দ্রীয় শাসকদল না বুঝলে খুবই আক্ষেপের।’’
কেন্দ্রীয় বাজেটের পরে বুধবার রাতে নিজেদের বরাদ্দ জানতে পেরেছে জ়োনাল রেল সংস্থাগুলি। এ বার উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় ৫০ কোটি কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫৪৯ কোটি টাকায়। বরাদ্দ কমায় অনেক প্রকল্পই বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। যদিও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি রূপায়নে সমস্যা হবে না বলে দাবি করা হয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলকর্তাদের তরফে।