প্রতীকী ছবি
করোনার সঙ্গে লড়াই করেই ঘুরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে বর্তমান অনিশ্চয়তার মধ্যেই আজ, সোমবার থেকে রাজ্যের ৫টি পর্যটক আবাস খোলার ঘোষণা করেছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। এরমধ্যে দক্ষিণবঙ্গের চারটি পর্যটক আবাস এবং ডুয়ার্সের একটি পর্যটক আবাস রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আদৌও কেউ বুকিং করবেন কিনা! এক জেলা থেকে আর এক জেলায় কেউ ঘুরতে যাবেন কি না- এসব হাজারো প্রশ্নের মাঝে পর্যটন দফতরের কর্তারা মনে করছেন, অনিশ্চয়তার এই পরিবেশের মধ্যে কাজ শুরু হলেও মূল লক্ষ্যটা পুজোর মরসুম। সরকার এগিয়ে এলে বাকিরাও সাহস পাবেন বলে জানাচ্ছেন, পর্যটনমন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের খবর, চেষ্টা করা হচ্ছে পুজোর আগে রাজ্যের ৩৪টি পর্যটক আবাসে শুরু হওয়া ভোলবদলের কাজ অনেকটা শেষ করে আনার। মোট ৩৫০ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী অফিসারদের সঙ্গে শিলিগুড়িতে সরকারি অতিথি নিবাস মৈনাকে বৈঠক করেছেন। চলতি সপ্তাহে ভিডিয়ো কনফারেন্সে মন্ত্রী, দফতরের প্রধান সচিব ও আমলাদের সঙ্গে আর এক দফায় বৈঠক করছেন।
মন্ত্রীর জানান, ‘‘আমাদের এগিয়ে সাধারণের মধ্যে মনোবল বাড়াতেই হবে। মার্চ মাস থেকে রোজই সকাল থেকে রাস্তায় নেমে কাজ করছি। এ বার পর্যটন ক্ষেত্রের জন্য ভাবা হচ্ছে। আর খালি পর্যটক কেন! আমরা চাইছি, আগের মত মানুষ কাজেকর্মে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পর্যটক আবাসগুলি বুকিং করে থাকুন। সেটা হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে, আমরা পর্যটক আবাসগুলি পরপর খুলব। পুজোর সময় আবাসনগুলির সংস্কারের বেশিরভাগ কাজ যাতে হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগমের নিয়ন্ত্রণে ৩৪টি পর্যটক আবাস রয়েছে। পর্যটন দফতরের রোজগারের কেন্দ্র এই নিগমের বিভিন্ন কর্মকান্ড। বাম আমলে লোকসানে চলা নিগম গত কয়েক বছর আগেই লাভজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। এর আওতায় থাকা পর্যটক আবাসগুলিতে পেশাদারিত্ব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রেস্তোরাঁ, পানশালার বরাত বদলে মেনুতে বদল করা হয়। বিভিন্ন হোটেল ম্যানেজমেন্ট সংস্থা এবং বড় সংস্থায় কর্মরত একদলকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়। তেমনিই, আবাসগুলির ভোলবদল, ঘরের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকার প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিভিন্ন ধাপে, প্রকল্পের ভিত্তিতে বরাদ্দ করে দেয়। ২০১৯ সাল থেকে পুরোমাত্রায় কাজ শুরু হয়ে যায়।
দার্জিলিঙের মত জনপ্রিয় শৈলশহরে আরও বড় আবাস, ডেলোতে নতুন আবাস, শিলিগুড়িতে মৈনাকের ঘর বাড়িয়ে অত্যাধুনিক ভবন, মালবাজারে সংস্কার করে নতুন আবাসের মত একাধিক কাজ শুরু করান মন্ত্রী। গত ফেব্রুয়ারিতেও কাজের গতি নিয়ে বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু মার্চ মাস থেকে কাজগুলি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়েছে। লকডাউনের এই তিনমাসে কোনও কাজ না হওয়ায় সব কাজই পিছিয়ে পড়েছে। এরমধ্যে আগামী মাস থেকে শুরু হবে বর্ষার মরসুম। তখানে বাইরের কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হলে, পর্যটক বা ঘুরতে ভালবাসা নাগরিকরা পুজোর সময় বার হবেন বলে অফিসারেরা মনে করছেন। সিকিম সরকারও পুজো, অক্টোবর মাসকে লক্ষ্য করেই এগোচ্ছে।