উচ্ছ্বসিত দিনহাটার তৃণমূল শিবির। —নিজস্ব চিত্র।
বজবজ এবং সাঁইথিয়ার মতো জোড়াফুল ফুটল কোচবিহারের দিনহাটা পুরসভাতেও। ওই পুরসভার ১৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন জোড়াফুল প্রার্থীরা। যার ফলে ১৬ আসনের দিনহাটা পুরসভা নির্বাচনী যুদ্ধের আগেই তৃণমূলের দখলে চলে গিয়েছে।
সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে দিনহাটা পুরসভার চারটি ওয়ার্ডে প্রার্থী প্রত্যাহার করে সিপিএম। তিনটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে তারাও প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়। বাম এবং বিজেপি দুই শিবিরই নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছে। ফলে দিনহাটার ১৬টি আসনের সব ক’টি ওয়ার্ডই ভোটের আগে তৃণমূলের ঝুলিতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা হয়নি।
বুধবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ওই সময়সীমা পেরনোর পর দেখা যায়, তৃণমূল সাতটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। তার পর দিনই বদলে গেল ছবিটা। বৃহস্পতিবার সকালে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে নির্বাচনী প্র্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করে সিপিএম। দলগত ভাবে সিপিএম দিনহাটার চারটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল। সেই প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয় দলের তরফে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ‘স্ক্রুটিনি’ শুরু হলে বিজেপি-র কয়েকটি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। ফলে দিনহাটা বিধানসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রাথমিক ভাবে ১৩টি আসন জিতে যায় তৃণমূল। দক্ষিণবঙ্গের বজবজ এবং সাঁইথিয়ার মতো উত্তরবঙ্গের এই পুরসভাও জোড়াফুল শিবিরের দখলে চলে যায়।
দিনহাটায় তৃণমূলের জয় নিয়ে বিজেপি-র কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায়ের বক্তব্য, ‘‘গোটা রাজ্যের মতো দিনহাটাতেও গণতন্ত্র নেই। গতকাল তৃণমূল নথিপত্র ছিনতাই করেছে। এমনকি, প্রার্থীর প্রস্তাবকদেরও হুমকি দিয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক উদয়ন গুহ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এ সব করেছেন। আমরা দিনহাটার পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করব।’’ বিজেপি-র সভাপতি এ-ও বলেন, ‘‘বাকি তিনটি আসনে যে বিজেপি প্রার্থীরা রয়েছেন তাঁদের নাম প্রত্যাহার করা হবে।’’
অন্য দিকে, সিপিএমের কোচবিহার জেলা কমিটির সদস্য শুভ্রালোক দাস বলেন, ‘‘এখানে গণতন্ত্রের সলিল সমাধি হয়েছে। আমরা চারটি মাত্র মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছিলাম। বাকিগুলোতে দিতে পারিনি। আজ হলফনামা জমা দেওয়ার তারিখ ছিল। কিন্তু দেখা গেল, মহকুমাশাসকের দফতর দুষ্কৃতীরা ঘিরে ফেলেছে। দিনহাটায় ভোট করার মতো পরিস্থিতি নেই। আমরা এই চারটি মনোনয়নের স্ক্রুটিনিতে অংশগ্রহণ করছি না।’’
দিনহাটা পুরসভা জয়ে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় বিধায়ক উদয়ন গুহ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ১৬টি আসনই জেতা। আমাদের জানাই ছিল যে, বিজেপি বা বামেদের যা সাংগঠনিক শক্তি তাতে ওরা প্রার্থী দিতে পারবে না। তবু কুড়িয়েবাড়িয়ে বিজেপি কয়েক জন প্রার্থী দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেনি।’’