West Bengal Lockdown

বন্ধক রেখে কোনওমতে চলছে সংসার

স্বামীর সংসার থেকে আলাদা হয়েছি দীর্ঘদিন আগে। সংসারের হাল ধরতে আমি এক চা প্যাকেজিং সংস্থায় কাজ করছিলাম।

Advertisement

বিজলি ঘোষ

চা প্যাকেজিং সংস্থার অস্থায়ী কর্মী, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৫
Share:

দেখতে দেখতে প্রায় এক মাস হয়ে গেল। এখন নুনভাত তো, কখনও শাকভাত খেয়েই কোনওরকমে দিন পার করছি। দীর্ঘদিন, এ রকম অবস্থায় আমাদের মতো মানুষের কষ্ট যে কী ভয়ঙ্কর বেড়ে গিয়েছে, তা আর বলার নয়। বাড়িতে ছ’জন সদস্য। চার জনের রোজগারে সংসার চলে। এখন তো চারজনেরই কাজ বন্ধ। রোজগার নেই কোনও। ঘরের সোনাদানা সামান্য যা কিছু ছিল, তাই বন্ধক দিয়ে চালাচ্ছি। কিন্তু তাও আর কতদিন?

Advertisement

স্বামীর সংসার থেকে আলাদা হয়েছি দীর্ঘদিন আগে। সংসারের হাল ধরতে আমি এক চা প্যাকেজিং সংস্থায় কাজ করছিলাম। মাসে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা আয় হত। বড় ছেলে অসুস্থ, কাজ করতে পারে না। বড় ছেলের স্ত্রী এবং ছোট ছেলের স্ত্রী অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করে কিছুটা আয় করত। দুই বাড়ি থেকেই এখন তাঁদের যেতে না করে দিয়েছে। ছোট ছেলেটা গাড়ি চালাত। সেকাজও বন্ধ। কীকরে কী করব জানি না।

আনাজের ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছে ছেলেরা। কিন্তু এই সময় তা করার মতো টাকাও ঘরে নেই। বাড়িতে একটা নাতি রয়েছে। কবে যে, এই দমবন্ধ করা অবস্থা থেকে মুক্তি পাব! সকলে মিলে এখন সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছি।

Advertisement

সপ্তাহখানেক আগে রেশন থেকে সকলের জন্য মাথাপিছু দু’কেজি করে চাল পেয়েছি। তা তো কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে। ফের কবে পাব জানি না। এখন বিভিন্ন ক্লাবের তরফে ত্রাণ বিলি হচ্ছে। তা জোগাড় করার চেষ্টা করছি সকলে। সেটাও না পাওয়া গেলে, না-খেয়ে দিন পার করতে হবে। কিন্তু সমস্যা তো ছোট নাতিটাকে নিয়ে! বাড়ির বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘরেও খাবার নেই। গরিবের বিপদ সবদিকেই। রোজ সকালে উঠে মনকে সান্ত্বনা দিই, আর তো মাত্র ক’য়েকটা দিন। ঠিক টেনে নেব। কিন্তু আবার বন্ধের ঘোষণা বেড়ে গেলে, জানি না কী হবে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement