ফাইল চিত্র।
কোথায় দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা!
করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি থেকে বিধায়ক, মন্ত্রীর দেখা মিলছে শিলিগুড়ির রাস্তায়। একমাত্র নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে দেখা মেলেনি রাজু বিস্তার। বিজেপির ওই সাংসদকে সোশ্যাল মিডিয়ার সাংসদ বলেও কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
দলীয় সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে বিজেপির ৭ জন সাংসদ আছেন। তাঁদের বেশিরভাগ এলাকায় থাকলেও বিস্তা ফেরেননি দার্জিলিঙে। তিনি দিল্লির বাড়িতেই আছেন। দিল্লি থেকে বসেই তিনি নির্বাচনী এলাকার দেখভাল করছেন।
যদিও গেরুয়া বিরোধীদের দাবি, বিজেপি সাংসদেরা তো দার্জিলিঙে ভোট নিতে আসেন। অথচ কোনও দুর্যোগ বা সমস্যায় তাঁদের পাওয়া যায় না। এর আগেও পাহাড় সমস্যার সময় সাংসদের দেখা মেলেনি। পাহাড়ে সেই সময় তিনি ‘নিখোঁজ’ বলে পোস্টারও পড়েছিল।
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বিজেপি সাংসদকে পরিযায়ী পাখির সঙ্গে একাধিকবার তুলনা করেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ওঁরা কেবলমাত্র ভোটে জিততে এখানে আসেন। বাকি সময় খুঁজে পাওয়া যায় না।’’
আর শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিজেপি সাংসদের নাম-নিশান পর্যন্ত নেই।’’ গত ২২ মার্চ থেকে রাজ্যে লকডাউন শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকার ২৪ মার্চ থেকে লকডাউনের ঘোষণা করে দেয়। তার মধ্যেই বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ এলাকায় পৌঁছে যান। রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি বা বালুরঘাটের সাংসদেরা রাস্তায় নামার চেষ্টা করেন। পুলিশের বাধার অভিযোগও তোলেন সাংসদেরা। সেখানে বিস্তাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে কখনও থালা, ঘণ্টা বাজানোর ছবিও পোস্ট করেন। আবার কখনও প্রদীপ জ্বালিয়ে তার ছবিও বিভিন্ন মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেন।
বিরোধীদের দাবি, বিস্তা চাইলে ২২ মার্চ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে এলাকায় এসে ত্রাণ, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বা মানুষের দেখভাল করতে পারতেন। এমনকি, তিনি চাইলে বিশেষ বিমানেও আসতে পারতেন। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘ওঁরা অনেক টাকা। ভোটের সময় দাখিল করা নথিতে দেখেছি। উনি মিথ্যা প্রচার না করে বাস্তবে কী কী করেছেন তার তালিকা দিন।’’
বিজেপি নেতারা অবশ্য জানাচ্ছেন, সাংসদ দিল্লি থেকে নিয়মিত এলাকার খোঁজ রাখছেন। কোথায় কী করতে হবে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন। খোদ সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘আমি দিল্লিতে থেকেও এলাকার মানুষের অনেক কাছে আছি। আর আমি তৃণমূলের নেতাদের বলছি, সাংসদেরা কি এলাকায় থেকে মানুষের মধ্যে যেতে পারছেন, ত্রাণ দিতে পারছেন। ওঁরা দু’মুখো নীতি নিয়ে চলছেন।’’