প্রতীকী ছবি
কখনও হোয়াটসঅ্যাপে দু’জন ছাত্র, কখনও তিন জন। ফোন নেই অন্ততপক্ষে দশ শতাংশ ছাত্রের। স্মার্ট ফোন না থাকার সংখ্যা পঞ্চাশ শতাংশের উপরে।
কোচবিহারের গ্রামীণ এলাকায় অনলাইন ক্লাসে তাই ভাল সাড়া মিলছে না বলে শিক্ষক, শিক্ষিকারা মনে করছেন। সেকারণে, এ বারে বাড়ি বাড়ি ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ পাঠানো হয়েছে। কি উত্তর আসে সেই অপেক্ষাতেই বসে রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষিকারা।
শিক্ষা দফতরের কোচবিহার জেলা ডিআই (মাধ্যমিক) রবিনা তামাং বলেন, “সব ছাত্রছাত্রীরাই যাতে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের হাতে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ‘টাস্ক’ দেওয়া হয়েছে।”
লকডাউন শুরু হতেই সব জায়গার সঙ্গেই কোচবিহারেও অনলাইন ক্লাস চালু হয়। প্রথমদিকে টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। এর পরেই শুরু করা হয় হোয়াটসঅ্যাপ ক্লাস।
শহরের স্কুলগুলিতে তাতে ভাল সাড়া পড়লেও, গ্রামের দিকে তেমনটা হয়নি বলে মনে করছেন শিক্ষক, শিক্ষিকারা।
দেওয়ানহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত পাল জানান, সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ক্লাস শুরু হয়। এ বছর ওই স্কুলে দশম শ্রেণিতে ২৪৩ জন পড়ুয়া রয়েছে। তার মধ্যে প্রথমদিকের ক্লাসে ৩০ জনের মতো ছাত্র উপস্থিত হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ওই সংখ্যা আরও কমে যায়। তিনি বলেন, “এক-একটি ক্লাসে দুই থেকে তিন জন ছাত্র উপস্থিত হতে থাকে। তার পরেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাই। দ্বাদশ শ্রেণিতে অবশ্য উপস্থিতির হার ভাল ছিল।”
প্রায় একই অবস্থা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্কুল কুশশারহাট হাইস্কুলের।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুময় সাহা জানান, স্কুলের একটি বড় অংশের ছাত্রছাত্রীর পরিবারের কারও স্মার্ট ফোন নেই। যাদের আছে তারাও তা নেটের সমস্যায় ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারে না। দশম শ্রেণিতে ১৫০ জনের মতো ছাত্রছাত্রী রয়েছে ওই স্কুলে। সেখানে হোয়াটসঅ্যাপ ক্লাসে দশ শতাংশের মতো উপস্থিতি থাকে। তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।” একই অবস্থা ধাইয়ের হাট মাদ্রাসার। সেখানকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হামিদুল ইসলাম জানান, সেখানে ৭৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে ৭০ জনের বাড়িতে ফোন নেই। ৩০০ জনের উপরে ছাত্রছাত্রীর বাড়িতে স্মার্ট ফোন নেই।
তিনি এ দিন বলেন, “সমস্যা আছে। তার মধ্যেই আমরা ক্লাস নিতে শুরু করেছি। বাড়িতে বাড়িতে অ্যাক্টিভিটি টাস্কও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” সীমান্তবর্তী গীতালদহ হাইস্কুলের চিত্র অবশ্য অনেকটাই অন্যরকম।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয়কুমার দাস জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে দশম শ্রেণির ক্লাস নিতে শুরু করেছেন। ক্লাসে ৪১২ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে অনলাইন ক্লাসে ১৫০ থেকে ২০০ জনের মতো উপস্থিত থাকছে।