প্রতীকী ছবি।
রেশন কার্ড নেই, সরকারি কুপনও মেলেনি। জলপাইগুড়ি জেলায় এমন বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। তাঁরা না পাচ্ছেন রাজ্যের রেশন, না মিলছে কেন্দ্রের বরাদ্দ। করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণার পরে বিনামূল্যে চাল-আটা দেওয়া হচ্ছে রেশন দোকান থেকে। কতজন এই সুবিধে পাচ্ছে তার হিসেব কষতে গিয়েই না-পাওয়া বাসিন্দাদের সংখ্যা নজরে এসেছে প্রশাসনের। এত বিপুল সংখ্যক মানুষ কেন রেশনের তালিকায় নেই সে প্রশ্ন এখন প্রশাসনের অন্দরেও উঠেছে।
দু’হাজার এগারো সালেই শেষ জনগণনা হয়েছিল। তখন জলপাইগুড়ি জেলা ছিল অবিভক্ত। অর্থাৎ তখনও আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হয়নি। সে সময় অবিভক্ত জেলায় বাসিন্দার সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৮ লাখ। ২০১৪ সালে জলপাইগুড়ি জেলা ভাগ হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকা ধরে জলপাইগুড়ি জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার এবং অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের তালিকা যাচাই করে প্রশাসনের হিসেবে এই মুহূর্তে জেলার লোকসংখ্যা আনুমানিক ২৮ লক্ষ। প্রশাসনের দাবি, জেলার জনসংখ্যা এর চেয়ে বেশি হতে পারে, তবে কিছুতেই কম নয়। চলতি মাসে জেলা প্রশাসনে জমা পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী জলপাইগুড়িতে মোট রেশন কার্ডের পরিমাণ সাড়ে ২৩ লক্ষের কাছাকাছি। এ ছাড়াও অনেকের নামে ডিজিটাল রেশন কার্ড অনুমোদন হয়েছে অথচ তাঁরা এখনও সেই কার্ড হাতে পাননি এমন সংখ্যা আরও প্রায় দেড় লক্ষ। দুইয়ে মিলে রেশনের চাল-গম পাচ্ছেন প্রায় ২৫ লক্ষ বাসিন্দা। বাকি তিন লক্ষের কাছে কোনও সুবিধেই নেই।
কেন এমন হল?
অভিযোগ ছিল বাম আমলে জেলায় জনসংখ্যার থেকে রেশন কার্ডের সংখ্যা বেশি ছিল। ভুয়ো রেশন কার্ডে খাদ্য সামগ্রী চুরি হয় বলে অভিযোগ ছিল। ভুয়ো কার্ড ধরতে অভিযান চলে বেশ কয়েক বছর। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি উল্টো। যদিও চুরির প্রবণতা কমেছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এই তিন লাখে এমনও রয়েছেন, যাঁদের পুরনো রেশন কার্ড আছে কিন্তু নতুন ডিজিটাল কার্ডের জন্য আবেদন করেননি। ডিলারের কাছে গেলে এদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। প্রশাসনের একটি সূত্রের এমনও দাবি, কর্মসূত্রে, পেশার তাগিদে জেলায় এসে অনেকে বসবাস করলেও এখানে রেশন কার্ড করাননি এমন ব্যক্তিও রয়েছেন। তবে সেই সংখ্যাটাও এত বেশি হবে না বলে মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীও এ দিন রেশন নিয়ে গাফিলতির কথা কবুল করেছেন। এ দিন জেলা সভাপতি বলেন, “কিছু কিছু জায়গায় অনেকের ডিজিটাল কার্ড নেই এবং কুপনও পাননি। এটা দেখতে প্রশাসনকে বলেছি।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)