West Bengal Lockdown

চার শিশুকে নিয়ে ১০০ কিমি পাড়ি

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বারোদুয়ারির রামনগর গ্রামের বেদপাড়ায় বাড়ি জিতেনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১০
Share:

—ফাইল চিত্র।

কোলে দু’মাসের শিশু। সঙ্গে আরও তিন সন্তান। চার মেয়েকে নিয়ে মালদহের কালিয়াচক থেকে হেঁটে বাড়ির পথে এগোলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের এক দম্পতি। দীর্ঘ ১০০ কিলোমিটার পথ চলতে গিয়ে তাঁরা বিশ্রাম নিচ্ছেন জাতীয় সড়কের ফুটপাতে। কখনও পুলিশ, কখনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দেওয়া খাবার খেয়েই মেয়েদের নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে মরিয়া জিতেন ও মাধবী বেদ।

Advertisement

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বারোদুয়ারির রামনগর গ্রামের বেদপাড়ায় বাড়ি জিতেনের। তিনি বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহ করেন। দোলের পরে সদ্যোজাত সন্তান সুন্দরী এবং আরও তিন শিশুকন্যাকে নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে কালিয়াচকের রেলগেট এলাকায় মধু সংগ্রহে যান তিনি। সেখানেই তাঁবুতে সপরিবার থাকছিলেন। ওই দম্পতি জানিয়েছেন, তবে করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউন হতেই জঙ্গলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় জিতেনের। তাঁবুতেই বন্দি হয়ে যান। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে খাবার মিললেও পাঁচটি পেট চালানো সমস্যা হয়ে উঠেছিল।

শুক্রবার দুপুরে মেয়েদের নিয়ে কালিয়াচক থেকে বেরিয়ে পড়েন সপরিবার। হাঁটতে শুরু করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে সাত বছরের রূপমালা, পাঁচ বছরের কমলাও। তিন বছরের মামনিকে কোলে তুলে নেন জিতেন। গত রাতে ৯টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে পৌঁছন তাঁরা। মেয়েরা আর হাঁটতে না পাড়ায় রথবাড়িতেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ফুটপাতে ত্রিপল পেতে শুয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে পৌঁছান টহলরত পুলিশ কর্মীরা। পুলিশের তরফে তাঁদের সকলের জন্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

শনিবার ভোরের আলো ফুটতেই ফের হাঁটতে শুরু করেন জিতেনরা। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে রেশন কার্ড রয়েছে। কোনও রকমে বাড়িতে পৌঁছলে রেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী মিলবে। আত্মীয়েরাও পাশে থাকবেন। কালিয়াচকে অর্ধাহারে দিন কাটছিল। তাই হেঁটেই বাড়ির পথে রওনা দিয়েছি।’’

মাধবী বলেন, ‘‘বনে হেঁটে হেঁটেই মধু সংগ্রহ করতে হয়। তবে ছোট

ছোট মেয়েদের দীর্ঘ পথ হাঁটার শক্তি নেই। তবে কষ্ট হলেও বাড়িতে ফিরতেই হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement