সাজসজ্জা: বড়দিনের আগে সেজে উঠেছে শিলিগুড়ি শহরের একটি গির্জা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কলকাতার পার্কস্ট্রিটের ছোঁয়া এ বার মালদহেও। বড়দিন ও বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে হওয়া প্রথম কার্নিভালকে ঘিরে মালদহের ইংরেজবাজার শহরে লেগেঠে উৎসবের ছোঁয়া।
কার্নিভালের প্রস্তুতিতে রবিবার সকাল থেকেই শহরে যেন সাজো সাজো রব। শহরের প্রাণকেন্দ্র জুড়ে থাকা রাজমহল রোড থেকে নেতাজি রোড সাজানো হয়েছে। যাঁরা বড়দিনে কলকাতার পার্কস্ট্রিটে গিয়েছেন, তাঁদের স্মৃতির সঙ্গে মিল পাবেন এখানে এসে। পুরো রাস্তার দু’পাশ জুড়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে রংবেরংয়ের ক্রিসমাস ট্রি। রাস্তার উপরে ঝুলছে রংবেরংয়ের তারা। ফোয়ারা মোড় ও আরও কয়েকটি মোড়ে তৈরি করা হয়েছে সান্তাক্লজ। যাদের সান্নিধ্য পেতে এ দিন সকাল থেকেই কচিকাঁচারা ভিড় জমিয়েছে সেখানে। রবিবার যেই সন্ধ্যা হয়েছে তখনই ঝলমলিয়ে উঠেছে আলোর রোশনাই। দুর্গাপুজোর পর ফের যেন উত্সবের আবহ শহরে। আর এই গোটা সাজসজ্জা হয়েছে মালদহ পুরসভার সৌজন্যে।
ইংরেজবাজার শহরে দু’টি গির্জা রয়েছে। সেগুলোও বড়দিন উপলক্ষ্যে আলোকমালায় সেজে উঠেছে। এ দিন থেকেই সাজো সাজো রব পড়েছে গির্জায়। এদিকে ছুটি পড়ায় বড়দিনের জমাটি পিকনিকের আসর বসাতেও তোড়জোড় শুরু করছেন সবাই। কিন্তু সব আনন্দকে যেন ছাপিয়ে গিয়েছে ইংরেজবাজার পুরসভার উদ্যোগে শহরে প্রথম হওয়া কার্নিভালের আনন্দ। নতুন বছরের প্রথম দিন পর্যন্ত, সাতদিন ধরে উৎসবের আবহে বাসিন্দাদের মাতিয়ে রাখতে সেজে উঠেছে গোটা ইংরেজবাজার শহর। কেমন হবে সেই উত্সব। তা টের পাওয়া গিয়েছে রবিবারই। আইটিআই মোড়ে থাকা বিদ্যাসাগরের মূর্তি থেকে সোজা রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ ধরে ফোয়ারা মোড় হয়ে নেতাজি মূর্তি পর্যন্ত পুরো রাস্তার দু’পাশ জুড়ে নানা কারুকাজে আলোর বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতি দেখতে সন্ধ্যায় সমস্ত আলোই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া এই রাস্তার দু’ধারে দশ মিটার পরপর বসানো হয়েছে রংবেরংয়ের ক্রিসমাস ট্রি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই সেই গাছগুলিতেও জ্বলে উঠেছে রংবরংয়ের আলো।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হবে উত্সবের সূচনা। এরজন্য ফোয়ারা মোড়ে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সেই মঞ্চে সাতদিনই চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুধু তাই নয়, সাতদিনই রাস্তার ইতিউতি ঘুরে বেড়াবে ছ’জন সান্তাক্লজ। কচিকাঁচাদের দেখলেই তাঁরা বিলোবেন কেক, চকলেট। একটি ঘোড়ার গাড়ি করে ঘুরে ঘুরে সান্তাক্লজরা মনোরঞ্জন করবেন। ছোটদের আনন্দ দিতে সান্তাক্লজের পাশাপাশি হাজির থাকবে ছোটাভীম, মোটু-পাতলুরাও। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও চকলেট ও কেক বিলি হবে শহরের একাধিক জায়গায়।
যানবাহন চলাচলে উত্সবমুখর বাসিন্দাদের কাছে যাতে সমস্যা না হয়ে দাঁড়ায় সেজন্য ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর দু’দিন রাজমহল রোডের রবীন্দ্র মূর্তি মোড় থেকে ফোয়ারা মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি বিকেল পাঁচটা- ন’টা পর্যন্ত যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। পরের ক’দিন রাজমহল মোড় থেকে ফোয়ারা মোড় পর্যন্ত গাড়ি নিয়ন্ত্রিত হবে।