বিয়ে দিচ্ছেন মহিলা পুরোহিত। নিজস্ব চিত্র।
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। মহিলারা যে সমাজে কোনও ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই, সেই বার্তা দিয়ে নবদম্পতির চার হাত এক করলেন মহিলা পুরোহিত। সোমবার রাতে এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল রায়গঞ্জ। স্ত্রীর ইচ্ছার মর্যাদা দিতেই মহিলা পুরোহিতে সায় দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন পাত্র। এই প্রথম বিয়ে দিয়ে নিজের খুশি গোপন করেননি মহিলা পুরোহিত সুলতা মণ্ডল।
সোমবার রায়গঞ্জের মোহরকুঞ্জ ভবনে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছে রায়গঞ্জের বীরনগরের বাসিন্দা ঋতুপর্ণা রায়ের। উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের বাসিন্দা রাজা দে-কে বিয়ে করেছেন তিনি। বাকি সব আর পাঁচটা বিয়ের মতো হলেও এই বিয়ের মূল আকর্ষণ ছিলেন মহিলা পুরোহিত। তাঁর বিয়ে দেওয়া দেখতেই ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকে। তাঁর গলাতে ‘যদিদং হৃহয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব...’ শুনে মুগ্ধ অনেকেই।
সুলতা মণ্ডলের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরে। ঋতুপর্ণার ডাকেই তিনি এসেছিলেন বিয়ে দিতে। সমাজে মহিলাদের মাথা উঁচু করে বাঁচার বার্তা দিতেই এই পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা। তাঁর এই প্রস্তাবে আগেই সায় দিয়েছিলেন মা শিপ্রা রায় ও বাবা কৃষ্ণ রায়। হবু স্ত্রীর এই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন পাত্রও।
জীবনে প্রথম বার বিয়ে দিয়ে যথেষ্ট আপ্লুত পুরোহিত সুলতা। বর্তমানে তিনি স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন। ইতিমধ্যে পৌরোহিত্য নিয়েও ডিপ্লোমা করেছেন তিনি। এই বিয়ে দেওয়া নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘এর আগে অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেছি। তবে বিয়ে আজ প্রথম দিলাম। খুব ভাল লাগছে আমার হাত দিয়ে দু’জনের নতুন জীবন শুরু হওয়ায়।’’ তবে সুলতাই প্রথম নন, এর আগে কলকাতায় বেশ কয়েকটি বিয়ে দিয়েছেন মহিলা পুরোহিতরা।