—ফাইল চিত্র।
‘জমির ঠিকঠাক কাগজ চাই’-এই দাবিতেই বিধানসভা ভোটের মুখে ফের জোট বাঁধতে শুরু করেছেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। অভিযোগ, ছিটমহল বিনিময়ের পরে পাঁচ বছর কেটে গেলেও জমির ‘ঠিক’ কাগজ হাতে পাননি বাসিন্দাদের কেউই। ‘খসড়া’ একটি কাগজ দেওয়া হলেও তা আদতে কারও কাজে লাগছে না বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারের তরফে যে কাগজ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে জমি কেনা বা বিক্রি করা যাবে না। ওই জমি দেখিয়ে কোনওরকম ঋণও নিতে পারবেন না বাসিন্দারা। কৃষকরাও কৃষিঋণ পাবেন না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের রাজ্য সরকারের তরফে জমির খতিয়ান-সহ কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে। তার পরে কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখব।’’ বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ছিটমহল বিনিময়ের পরে এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার জমির কাগজপত্র তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে তা আজও হয়নি।’’
পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময় চুক্তি হয়। বাসিন্দারা জানান, বিনিময়ের আগে, ওই অংশে কোনও আইনের শাসন ছিল না। পড়াশোনা থেকে শুরু করে চিকিৎসার সুবিধে কোনও কিছুই তাঁরা পেতেন না। বিনিময়ের পরে সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু জমির সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। এখনও তাঁদের এই নিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
সাবেক ছিটমহল মশালডাঙার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘‘আমরা কৃষক পরিবার। জমি থেকে যে ঋণ পাব সেটাও পাচ্ছি না। আর যে কাগজ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে জমি বিক্রি বা কেনা কোনওটাই হচ্ছে না। খুব অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবেক ছিটমলে ৭ হাজার ১১০ একর জমি রয়েছে। তার মধ্যে ৬ হাজার ২০০ একর জমি বাসিন্দাদের দখলে রয়েছে। ওই জমিরই কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, জমি বিপদে-আপদে সবসময় তাঁদের রক্ষা করে। চাষ করে যেমন রোজগার হয় আবার প্রয়োজনে তা কিনতে বা বিক্রিও করতে পারেন তাঁরা। সেই ব্যবস্থা বর্তমান কাগজে হচ্ছে না। তাই তাঁদের জমির কাগজপত্রের সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। ভোটের মুখে ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আবার জমির অধিকারের দাবি উঠতে শুরু করেছে।