কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের হুমকিতে ঘরছাড়া বিজেপি প্রার্থীদের অনেকেই। দক্ষিণ দিনাজপুরে শাসকদলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলল গেরুয়া শিবির। তাদের অভিযোগ, গঙ্গারামপুরের নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চার বিজেপি প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের ১০ সদস্য ঘরছাড়া হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বালুরঘাটে দলের জেলা কার্যালয়ে।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন মঙ্গলবার। নির্বাচন আগামী ৮ জুলাই। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রাণে মারার হুমকিও দিচ্ছেন বিজেপি কর্মী ও প্রার্থীদের। বিজেপির দাবি, নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ‘আক্রান্তেরা’ আশ্রয় নিয়েছেন বালুরঘাটের পার্টি অফিসে। আপাতত আক্রমণের ভয় না থাকলেও পরবর্তী সময়ে কী ভাবে গ্রামে ফিরবেন বা কী ভাবে স্বাভাবিক জীবন কাটাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। গ্রামে ফিরলেও ফের হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
জেলা বিজেপির সভাপতি স্বরূপ চৌধুরীর অভিযোগ, সোমবার সকালেই নন্দনপুর এলাকার এক প্রার্থীকে নিয়ে এসে জোর করে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে নেয় তৃণমূল। তিনি আরও জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপি পার্টি অফিসে প্রাণের ভয়ে আশ্রয় নিয়েছেন চার বিজেপি প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা। নিরাপত্তার অভাবে অনেকেই নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। স্বরূপের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রাণের ভয় তাঁদের প্রার্থীরা পার্টি অফিসে আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, “আমরা বার বার বলছি, এখন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা দরকার। না হলে গ্রামে এমন ঘটনা আরও ঘটবে।”
অন্য দিকে, বিজেপি প্রার্থী খগেশ্বর বর্মণ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতি নিয়ত হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। গত পঞ্চায়েত ভোটের পর নন্দনপুর এলাকায় সব থেকে বেশি মানুষকে ঘর ছাড়া হতে হয়েছিল। এ বার ভোটের আগে থেকেই ঘরছাড়ার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। খগেশ্বর বলেন, “তৃণমূলের কর্মী ও নেতারা বাড়ি এসে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাই প্রাণ বাঁচাতে আমরা পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছি। ভোটের আগে ক’দিন এখানেই থাকতে হবে। কিন্তু তার পরে কী ভাবে গ্রামে ফিরব তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁরা যা ব্যবস্থা নেবেন, সে ভাবেই চলব আগামী দিনে।”
তৃণমূল অবশ্য এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকীর দাবি, বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। তিনি বলেন, “নন্দনপুর এলাকার কিছু মানুষকে নিয়ে পার্টি অফিসে মিটিং করতেই পারে ওরা। কিন্তু তাঁদেরকে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে ভোটের বাজারে নিজেদের প্রতি সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করছে বিজেপি।