প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণের ‘গ্রাফ’ লাফিয়ে বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। কয়েকদিন আগে ২৩ মার্চ থেকে ১০ দিনে ৬০০ জন আক্রান্তের সংখ্যা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায়। কিন্তু সেই আশ্ঙ্কাকে আরও অনেক গুণ বাড়িয়ে গত ১০ দিনে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়াল ১২৩২। অর্থাৎ দ্বিগুণ! সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে উদ্বেগও বাড়ছে সমানে। গত তিনদিন ধরে প্রতিদিন দেড়শোর বেশি নতুন সংক্রমণ ঘটেছে উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতিবার তা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
উত্তরে এ দিন মোট আক্রান্ত ৩১৬ জন। মালদহের পরিস্থিতি সব চেয়ে খারাপ। এ দিন মালদহেই ২১০০ নমুনা পরীক্ষায় নতুন সংক্রমণ মিলেছে ১৬৩ জনের। তার আগের দিনও নতুন আক্রান্ত ছিলেন শতাধিক। উত্তর দিনাজপুরে দিনে ৪০ জন নতুন আক্রান্তও মিলছে। সেখানে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম। ৪৫০ থেকে ৫০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। সেই হিসাবে সংক্রমণের হার অনেকটাই বেশি বলে বিশেষজ্ঞদের মত। দার্জিলিং জেলায় ৬ এপ্রিল ৭৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। শিলিগুড়ি শহরে এক পরিবারের ৮ জন আক্রান্ত। তাঁদের একজন করোনায় সম্প্রতি মারাও গিয়েছেন। তুলনায় ডুয়ার্সে আক্রান্ত অনেকটাই কম। কোচবিহারে প্রতিদিন ৫-৬ জন, আলিপুরদুয়ারে ৩-৪ জন করে নতুন আক্রান্ত হচ্ছেন। আলিপুরদুয়ারে লালারসের পরীক্ষার সংখ্যাও অনেক কম। গড়ে প্রতিদিন ৫০০টি। জলপাইগুড়ি জেলাতেও সংক্রমণ বাড়ছে। কয়েকদিন ধরে ১২ জন, ১৬ জন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর হদিস মিলছে।
উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘কোভিড বিধি মানতে বলে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তার পরেও সভা, মিছিলে করোনা বিধি মানার ব্যাপার থাকছে না। আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে। তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। তাই সতর্ক থাকা উচিত।’’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারে, সভায় ভিড় সংক্রমণের হার বৃদ্ধিতে ইন্ধন দিচ্ছে বলেই চিকিৎসকদের অধিকাংশের মত। মিছিল, জনসভায় লোক নিয়ন্ত্রণের বা বিধি মানার কড়াকড়ি তো দূরের কথা অধিকাংশের মুখে মাস্ক পর্যন্ত থাকছে না কেন। ভোট বলে দেখেও তা দেখার কেউ নেই। সেই সঙ্গে উপসর্গহীন অবস্থায় সংক্রমণ নিয়ে অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে চিকিৎসকদের ধারণা।