জলকষ্টেও জল নষ্ট

বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরের পানীয় জলের ট্যাপকলগুলি দিয়ে অঝোরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে পানীয় জল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

চকভৃগুতে নষ্ট হচ্ছে জল। ছবি: অমিত মোহান্ত

ট্যাপ কলের মুখ ভাঙা, তাই সারা দিন ধরে পড়ে যাচ্ছে লিটারের পর লিটার পানীয় জল, ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। আবার আর এক দিকে সেই জলের জন্যই বাসিন্দাদের হাঁটতে হচ্ছে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার।

Advertisement

ছবি দু’টো হলেও জেলা একই। যেখানে তপনের বিস্তীর্ণ এলাকা ধুঁকছে জলের অভাবে, সেখানেই বালুরঘাট, গঙ্গারামপুরের মতো জায়গায় সারা দিন ধরে অনর্গল পড়ে যাচ্ছে পানীয় জল। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে খবর, সচেতনতার অভাবই এর জন্য দায়ী। দুই ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক অবহেলাকেই দায়ী করছেন বাসিন্দারা।

জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত তপন ব্লকের পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। এই ব্লকের পাহাড়পুর, মাধবপুর, সন্ধ্যাপুরের মতো এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই সব এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর এতটাই নেমে গিয়েছে যে, টিউবওয়েল তো দূরের কথা, চার-পাঁচ বছর হল জল ওঠে না সাবমার্সিবলেও।

Advertisement

সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার জলের সমস্যা মেটাতে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। কিন্তু গত চার বছরেও সেই কাজ শেষ হয়নি। ফলে মেটেনি সমস্যা। এখন কয়েক কিমি দূরে হেঁটে গিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে থাকা বিএসএফের জওয়ানরাই প্রতিদিন পানীয় জল সরবরাহ করে গ্রামগুলিকে বাঁচিয়ে রাখছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রত্না রায় বর্মণ, বিপুল বর্মণদের কথায়, ‘‘বিএসএফের জওয়ানদের জন্য আমরা পানীয় জল পাচ্ছি।’’ ১২২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের পাহাড়পুর বিওপির আধিকারিক রণবীর সিংহ বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের এ ভাবে বেশ কিছু বছর ধরেই জল দেওয়া হচ্ছে।’’ কিন্তু এই সুবিধে নেই তপনের ভাড়িলা, লস্কর হাট, পদ্মপুকুরের মতো এলাকায়। সেখানে এক কলসি জলের জন্য যেতে হয় বহু দূর।

কিন্তু বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরের পানীয় জলের ট্যাপকলগুলি দিয়ে অঝোরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে পানীয় জল। বালুরঘাটের চকভৃগু, চকভবানী পাড়া ছাড়াও গঙ্গারামপুরের হাইরোড, দত্তপাড়ার মতো এলাকার ভাঙা ট্যাপকলগুলির জন্য হাজার হাজার লিটার জল অপচয় হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই ট্যাপকলগুলি দিয়ে এই ভাবে জলের অপচয় হওয়া সত্ত্বেও পুরকর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনও সদর্থক উদ্যোগ নেয়নি। তাই জেলারই এক দিকে জলের জন্য হাহাকার শুরু হলেও প্রশাসনিক উদাসীনতায় এ ভাবে তার অপচয় হচ্ছে।

গঙ্গারামপুরের উপ-পুরপ্রধান অমল সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিচ্ছি কোন কোন এলাকায় এই সমস্যা রয়েছে। সেখানে ট্যাপকলগুলি মেরামত করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement