গুলিবিদ্ধ ভোটার বিপ্লব সান্যাল। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের মাথাভাঙা। মাথাভাঙার ১ নম্বর ব্লকের বেলতাপাড়া ২১২ নম্বর বুথে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিপ্লব সান্যাল ভোট দিতে গেলে গেরুয়া শিবিরের এক দল দুষ্কৃতী এসে গুলি চালাতে থাকে। সেই সময় সেখানে উপস্থিত বাকি ভোটারদের বাঁচানোর চেষ্টা করার সময় বিপ্লবের হাতে গুলি লাগে। এর পর তাঁকে উদ্ধার করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। যদিও বিজেপির তরফে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
বিপ্লব বলেন, ‘‘বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বুথের সামনে বোমাবাজি করছিল এবং গুলি চালাচ্ছিল। সেই সময় আমি ওখানে উপস্থিত বয়স্ক ভোটারদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। আমার হাতে গুলি এসে লাগে।’’
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোচবিহার বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁরাই টিকিট পাওয়া প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করছেন। শনিবার সকাল থেকে সব জায়গাতেই এই জিনিস চলছে। আর দোষ চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে বিজেপির ঘাড়ে।’’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহারের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা। শনিবার সকালে কোচবিহারের দক্ষিণ বিধানসভার ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটেরহাট ৩৮ নম্বর বুথের মধ্যেই ব্যাপক বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় মাধব বিশ্বাস নামে এক বিজেপি এজেন্টের। বেশ কয়েক জন আহতও হয়েছেন। বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী মায়া ভৌমিক সরকারও। জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মী এবং প্রিসাইডিং অফিসার। যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এর পর ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় গুলিবিদ্ধ হন দিনহাটার গিতালদহ এলাকার ভাগ্নি পার্ট-১ বুথের বাসিন্দা চিরঞ্জিৎ কার্জি। পরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চিরঞ্জিৎকে দলীয় কর্মী বলে দাবি করেছে বিজেপি। যদিও সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন চিরঞ্জিতের ঘনিষ্ঠরা। চিরঞ্জিতের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হন রাধিকা বর্মণ নামে এক মহিলা। তাঁকেও দলীয় কর্মী বলে দাবি করেছে বিজেপি।