প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলছেই। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের কমতি নেই আলিপুরদুয়ারে। কিন্তু সেই শহরেই রমরমিয়ে চলছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের বহুল ব্যবহার নিয়ে উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বারংবার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পুর কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন কাউন্সিলরদের একাংশও। কিন্তু প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের বিষয়টি নিয়ে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলে একে অপরকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পুরসভা। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান আশিষ দত্ত স্বীকার করেছেন বছর খানেক আগে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা উদ্যোগ নিয়েছে। অভিযান চালিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। জরিমানা করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের।’’ সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ওরা স্মারকলিপি দিয়ে, মাইকে প্রচার সেরে দায় সারেন। আর সংবাদপত্রে বিবৃতি দেন। তাঁদের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না।’’ তবে পুরসভার অভিযান জারি থাকবে বলে জানান তিনি।
কাউন্সিলরদের একাংশের অভিযোগ, শহরের প্রায় প্রতিটি দোকানে বেআইনি প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ পাওয়া যায়। শহরবাসী নিজেরা বাজারের ব্যাগ না নিয়ে দোকানে গিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ চান। প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহার হওয়ায় বর্ষার সময় জল নিকাশির ক্ষেত্রে নানা ধরণের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বড় বড় নর্দমাগুলি আবর্জনা ও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দিয়ে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, ‘‘আমার প্রচার চালিয়েছি আগে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বার বার প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ শহরে ফিরিয়ে আনছেন।’’ তিনি জানান, বছরখানেক আগে পুরসভা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিয়ে অভিযান চালানোয় বেশ কিছুদিন প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দেখা যায়নি বাজারে। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা থাকছে না বলে অভিযোগ তাঁর। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “আমারা দোকানে দোকানে গিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছি। প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা পুরসভার হাতে। তাঁরা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ রুখতে ব্যর্থ।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীদের একাংশ গ্রাহকদের চাহিদার কথা বলেছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘পুরসভা কদাচিৎ জরিমানা করে। তবে তা নিয়মিত না হওয়ায় গ্রাহকদের চাপেই বার বার ফিরে আসছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ।’’