ফাইল চিত্র।
টিফিন কৌটো হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন অন্তঃস্বত্ত্বা এক মহিলা। তাঁর পথ আটকে টিফিন কৌটো খুলে দেখলেন এক মহিলা জওয়ান। এমনই ছবি কালিয়াচকের মিলিক সুলতানপুর সীমান্তে। অন্তঃস্বত্ত্বা ওই মহিলা বলেন, “টিফিন কৌটোয় খিচুড়ি রয়েছে। তারপরেও তল্লাশি চালানো হয়। বাড়ি থেকে বের হলেই প্রতি পদে পদে বিএসএফের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়। তল্লাশি থেকে রেহায় মেলে না শিশু, কিশোরদেরও।”
কালিয়াচকের মিলিক সুলতানপুরের মতোই মালদহের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিই গল্প যেন একই। এমন অবস্থায় বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির খবরে তটস্থ সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দারা। পুরাতন মালদহের মুচিয়ার এক প্রবীন বাসিন্দা বলেন, “সন্ধ্যের পর ঘর বন্দি হয়ে থাকতে হয়। বাড়ির বাইরে বের হলেই বিএসএফের জেরার মুখে পড়তে হয়। এমন অবস্থায় বিএসএফের ক্ষমতা বাড়লে বাপ-ঠাকুরদার ভিটে ছাড়তে হবে।”
সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, কাঁটাতারের ফলে বদলে গিয়েছে রোজ নামচা। বর্ডার কার্ড হাতে নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে হয়। যদিও বিএসএফের এক কর্তা বলেন, “গ্রামবাসীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই সীমান্তে জওয়ানেরা কাজ করেন। এমনকি গ্রামে গ্রামে সামাজিক কাজও করা হয়।”
প্রশাসনের দাবি, মালদহে মোট ১৭৮ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর, ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর এবং বামনগোলা-এই ৬টি থানা সীমান্ত লাগুয়া। সীমান্তের পাশাপাশি লাগুয়া গ্রামগুলিতেও নিয়মিত টহলদারি চালায় বিএসএফ। বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়িয়েছে কেন্দ্র। বিএসএফ ৫০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকলে তাদের এক্রিয়ারে পড়বে ইংরেজবাজার এবং পুরাতন মালদহ শহরও।
পুলিশের একাংশের দাবি, সীমান্তে ঢুকলে এমনিতেই বিএসএফের অনুমতি নিতে হয়। বিএসএফের এলাকা আরও বাড়লে সীমান্ত থানাগুলিতে কাজ চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে। যদিও প্রকাশ্যে সীমান্ত এলাকা বৃদ্ধি নিয়ে কিছু মন্তব্য করতে নারাজ জেলা পুলিশের কর্তারা।