—প্রতীকী চিত্র।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে পুরসভা গঠনের প্রতিশ্রুতি বিধানসভা ভোটে তৃণমূল, বিজেপি উভয়ই দিয়েছিল বলে খবর। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গেলে, সংশ্লিষ্ট দলের নেতা-কর্মীদের কাছে মানুষ জানতে চাইছেন, কবে তাঁদের এলাকা পুরসভার স্বীকৃতি পাবে? ভোটে মানুষের সমর্থন পেতে বাসিন্দাদের কাছে এখন তৃণমূলের দাবি— এটাই এখানে শেষ পঞ্চায়েত ভোট। বিজেপির বক্তব্য— বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। বামেদের কটাক্ষ— গোটাটাই দু’দলের ‘ভাঁওতা’।
গত বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন গৌতম দেব। আগে দু’দফায় সেখান থেকে জয়ী হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর ‘মিনি’ সচিবালয় তাঁর হাত ধরেই হয়েছে। শেষ বিধানসভা ভোটে তিনি বিজেপির শিখা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান। বামেদের তরফে সিপিএম নেতা দিলীপ সিংহ গত দু’দফায় প্রার্থী ছিলেন। গৌতম দেব বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের আকাঙ্ক্ষা, এলাকা পুরসভা হোক। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’ তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ভোটের প্রচারে গিয়ে মানুষের এই প্রত্যাশার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের। ফুলবাড়ির বাসিন্দা, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের নেতা তথা বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস প্রামাণিক বলেন, ‘‘গত বিধানসভায় এই এলাকায় আমরা জিতলে, বাসিন্দাদের এ বার পঞ্চায়েত ভোট হয়তো দেখতে হত না। আমরা মানুষকে বলছি, এটাই শেষ পঞ্চায়েত ভোট।’’
তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার আশ্বাস দেওয়া হলেও পুরসভা করার উদ্যোগ চোখে পড়েনি। অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জল, পথবাতি, নিকাশি, আবর্জনা সাফাইয়ের পরিষেবা পঞ্চায়েত থেকে ঠিক মতো মেলে না। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া এই এলাকায় জনবসতি বাড়ায় স্থানীয়দের দাবি, উন্নত পরিষেবা দিতে পুরসভা গঠন জরুরি এবং পঞ্চায়েতের পরিকাঠামোয় তা সম্ভব নয়।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এলাকায় পুরসভা গঠন হোক, তাঁরাও চাইছেন। এলাকার বর্তমান বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই এলাকা পুরসভা করার কথা বার বার বিধানসভায় তুলেছি। বর্তমান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আর্থিক পরিস্থিতিতে এখনই পুরসভা করা যাচ্ছে না। তবে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।’’ বিধায়কের কথায়, ‘‘মানুষের এই দাবি যুক্তিযুক্ত। আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলে অবশ্যই করে দিতাম।’’ অন্য দিকে, সিপিএমের বক্তব্য, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি। সিপিএম নেতা দিলীপ সিংহ বলেন, ‘‘নাগরিক কনভেনশন করে পুরসভার দাবি আমরাই প্রথম তুলেছি। তার পরে, বিধানসভা ভোটে নিজেদের ইস্তাহারে তা রাখে তৃণমূল এবং বিজেপি। মানুষ তো এ বিষয়ে জানতে চাইবেনই।’’