একমনে: কাজে ব্যস্ত শিল্পী। মজলিশ বাগে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে বদলে গিয়েছিল রুটি-রুজি। মহালয়ার আগে ফের নিজেদের পেশায় ফিরল হস্তশিল্পের গ্রাম মালদহের গাজলের মজলিশ বাগ। মঙ্গলবার জেলা শিল্পকেন্দ্রের মাধ্যমে কলকাতার একটি ক্লাবের সঙ্গে পুজোমণ্ডপ সাজানোর বরাত পেলেন মজলিশ বাগের শিল্পীরা। পুজোয় অন্যান্য ক্লাবকর্তারাও এগিয়ে এলে শিল্পের হাল ফিরবে বলে জানিয়েছেন যতীন টুডু, মল্লিকা মুর্মূরা। তাঁদের পাশে থেকে সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মালদহ জেলা শিল্পকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
আদিবাসী প্রধান গ্রাম গাজলের মজলিশ বাগ। গ্রামে তিন শতাধিক পরিবারের বসবাস। পুরুষ থেকে মহিলা, গ্রামের সকলেই বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি করেন বাতিদানি, ফুলঝুরি, ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী। জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি-বেসরকারি মেলায় পসরা সাজান মজলিশ বাগের শিল্পীরা। বছরভর হস্তশিল্পের কাজ করেই গ্রামের মানুষদের চলে সংসার। তবে করোনা-আবহে বদলে গিয়েছে গ্রামের মানুষদের রুটি-রুজি। বাঁশ, বেতের সামগ্রী তৈরি করলেও মেলা, অনুষ্ঠান না হওয়ায় বিক্রি করতে পারছিলেন না। এমন অবস্থায় পেশা বদলে অনেকেই শুরু করেন দিনমজুরি।
দেবীপক্ষ সূচনার আগেই পুজোমণ্ডল সাজানোর কাজের বরাত পাওয়ায় খুশির আবহ তৈরি হয়েছে গ্রামে। কলকাতার প্রফুল্ল কাননের কেষ্টপুরের মাস্টারদা স্মৃতিসঙ্ঘের এ বারের থিম ‘পুজো এ বার উপলক্ষ্য, পাশে থাকায় প্রধান লক্ষ্য’। মণ্ডপশিল্পী মানস রায় বলেন, “গ্রামবাংলার হস্তশিল্পকে মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হবে। কোচবিহারের শিতলপাটি, মালদহের বাঁশ, বেতের সামগ্রী, বর্ধমানের কাঠের পুতুল মণ্ডপে ব্যবহার করা হবে। লকডাউনে হস্তশিল্পীদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এ বারে মণ্ডপের থিমে হস্তশিল্পকে ব্যবহার করা হয়েছে।” আর হস্তশিল্পীরা যাতে তাঁদের কাজের নায্য দাম পান সে জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে জেলার শিল্পকেন্দ্রগুলির সঙ্গে। মালদহ জেলা শিল্পকেন্দ্রের ম্যানেজার মানবেন্দ্র মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ শুরু করেছি।”