তিন চিকিৎসকের মধ্যে দু’জন টানা ছুটিতে৷ যার জেরে হোঁচট খেয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে চলা এই অচলাবস্থার জেরে কোনওদিন ওই বিভাগের আউটডোরে চিকিৎসক বসছেন, তো কোনওদিন বিনা নোটিশেই তা বন্ধ থাকছে৷ ফলে দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ছুটে গেলেও, বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁদের৷ এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ বাড়ছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে৷
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন৷ যাদের মধ্যে অসুস্থতার কারণে দুই চিকিৎসক টানা ছুটিতে রয়েছেন৷ এরই মধ্যে ২১ডিসেম্বর দায়িত্বে থাকা একমাত্র চিকিৎসকও ছুটি নেওয়ায় ওই বিভাগটিই টানা কয়েকদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল। অভিযোগ ওইদিন বিভাগের আউটডোরে লিখে দেওয়া হয়েছিল ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগটি বন্ধ রাখা হবে৷ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে হইচই শুরু হতেই টনক নড়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের৷ ছুটি বাতিল করে পরেরদিন থেকেই কাজে যোগ দেন ওই চিকিৎসক৷
কিন্তু অভিযোগ, ওই চিকিৎসক ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দিলেও একা উনিই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। যার ফলে হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের অচলাবস্থ কোনও অবস্থাতেই কাটছে না৷ মাঝেমধ্যেই বিনা নোটিশে বন্ধ থাকছে ওই বিভাগের আউটডোর৷ মঙ্গলবারও একই ঘটনা ঘটায় ক্ষোভ ছড়ায় রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে৷
এ দিন নিজের নাতনিকে নিয়ে কান পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ডেঙ্গুয়াঝারের বাসিন্দা মোতিউর রহমান৷ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সব কাজ ফেলে নাতনিকে নিয়ে হাসপাতালে এলাম৷ এসে দেখছি এই বিভাগের আউটডোর বন্ধ৷ কবে খোলা থাকবে কেউ তা বলতেও পারছেন না৷’’ বোদাগঞ্জের বাসিন্দা মহম্মদ আজিজউদ্দিন বলেন, ‘অনেকদিন থেকেই গলাটা ব্যাথা করছে৷ এ দিন সময় বের করে হাসপাতালে এসেছিলাম৷ কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে৷’’ এ ভাবে দুর্ভোগে ফেলার কোনও মানে হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
হাসপাতালের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, মাত্র একজন চিকিৎসককে দিয়ে ওই বিভাগের কাজ চলছে। যার জন্যই ওই বিভাগে এই ঘটনা ঘটছে৷ হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘দুই চিকিৎসক ছুটিতে৷ বাকি একজন চিকিৎসককে দিয়ে সপ্তাহে চারদিন আউটডোরে ডিউটি করানো হচ্ছে৷’’ শীঘ্রই আরও একজন চিকিৎসক কাজে যোগ দেবেন বলে তাঁর আশ্বাস৷ তাহলে তখন সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে তাঁর দাবি।