দ্বন্দ্ব: ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। হরিশ্চন্দ্রপুর। নিজস্ব চিত্র
‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ এ বার গুলি চলার অভিযোগ উঠল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।
ভাঙচুর করা হল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবির গাড়ি। বুধবারের ওই ঘটনায় বিপক্ষের মারধরে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দেওরের নেতৃত্বে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদ সদস্যার স্বামী আমিনুল হক ও কয়েক জনকে। রাস্তা তৈরির কাজে ‘কাটমানি’ ঘিরে ঝামেলার সূত্রপাত বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জের গড়িয়েছে থানা পর্যন্ত।
জেলায় দলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি ভিডিয়ো বৈঠকে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ মেটাতে জেলা নেতৃত্বকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও ব্লকস্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলি, মারধর, গাড়ি ভাঙচুরের মতো অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের শিশাতলা থেকে কুমেদপুর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে আট কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বুধবার ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের নিয়ে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করতে কুমেদপুরে গিয়েছিলেন আমিনুল হক। তাঁর অভিযোগ, সেখানে গাড়ি থেকে নামতেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবির দেওর জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী চড়াও হয়ে তাঁদের মারধর করতে শুরু করেন। হামলাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেও অভিযোগ।
বুধবার বিকেলে ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবির উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ।
জুবেদা বিবি বলেন, ‘‘ব্লক থেকে কিছুটা এগিয়েই কাটিগাঙ এলাকায় পরপর ছয় থেকে সাত বার গুলির শব্দ শুনতে পাই। হামলার আশঙ্কায় চালককে গাড়ি ঘোরাতে বলি। কিন্তু আমিনুল, তাঁর দুই ছেলে দলবল নিয়ে তাড়া করায় এক বাড়িতে আশ্রয় নিই। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে চড়াও হয়ে ওঁরা আমাকে ও আমার দিদিকেও মারধর করেন।’’
আমিনুল হক বলেন, ‘‘সভাপতির স্বামী আসরাফুল হক রাস্তার কাজের জন্য ২০ লক্ষ টাকা কাটমানি চেয়েছিলেন। বুধবার ওই এলাকায় ঠিকাদারের লোকজনের জন্য ঘরের বন্দোবস্ত করতে যাই। তখনই আমাদের উপরে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা হয়। পুলিশে অভিযোগ হয়েছে জেনে বিপাকে পড়ে নিজেরাই পরিকল্পনা করে গাড়ি ভাঙচুর করেছে মারধরের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’
আসরাফুল অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমার চেষ্টায় রাস্তার বরাদ্দ মিলেছে। বুধবার আমিনুল দুষ্কৃতীদের নিয়ে ওই রাস্তার শিলান্যাস করতে যায়। তখনই স্থানীয়রা তার প্রতিবাদ করেন।’’ আমিনুল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, ‘‘স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। খোঁজ নিয়ে দলীয় স্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’