প্রতীকী ছবি।
ফের ছেলেধরা গুজব আলিপুরদুয়ারে। তবে এ বার পুলিশের তৎপরতায় গণপিটুনির হাত থেকে বেঁচে গেলেন উত্তরপ্রদেশের এক মহিলা। শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ার জংশনের ঘটনা।
শনিবার দুপুরে ডিআরএম চৌপথীর কাছে রাস্তার ধারের একটি দোকানের সামনে বেঞ্চে এক মহিলাকে বসে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। মহিলার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। পরনে ছিল নীল রঙের বেশ খানিকটা ময়লা হয়ে যাওয়া চুড়িদার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অপরিচিত ওই মহিলাকে বসে থাকতে দেখে অনেকেই তাঁকে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় সম্প্রতি ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছিল। অচেনা মুখ দেখে ওই মহিলাকে ঘিরে ছোটখাটো ভিড় জমতে শুরু করে। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তখন রাস্তার দু’দিক থেকে দু’টি পুলিশের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশকর্মীরা মহিলাকে গাড়িতে তুলে জংশন ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর নাম বিনীতা মরিয়া। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে। তিনি জানান, ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষে করতে করতে তিনি আলিপুরদুয়ার চলে এসেছিলেন। তারপর হাঁটতে হাঁটতে ডিআরএম চৌপথীর কাছে চলে যান। তাঁকে ঘিরে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতে পারে বলে খবর মিলতেই মুহূর্তেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান জংশন ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা। এ দিন জংশন ফাঁড়ির তৎপরতায় জেলার একাধিক পুলিশ কর্তা খুশি হলেও হাজার প্রচারেও ছেলেধরা গুজব বন্ধ না হওয়ায় চিন্তাও বাড়ছে তাঁদের। জুন মাসে পাটকাপাড়ায় ছেলেধরা গুজবে এক বৃদ্ধ গণপিটুনির শিকার হন। পরবর্তীতে কালচিনির রায়মাটাং বাগান, দলসিংপাড়া ও মাঝেরডাবরিতে পরপর গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। শেষের দুটি ঘটনায় গণপিটুনি থেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকেও। তারপরে জেলাজুড়ে প্রচার চললেও ফের গুজব ছড়ানোয় চিন্তা বেড়েছে।
পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘সচেতনতামূলক প্রচারের সঙ্গেই এমন ঘটনা এড়াতে পুলিশ সব সময়ই তৎপর। সেজন্যই এ দিন খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জংশন ফাঁড়ির পুলিশ মহিলাকে উদ্ধার করে। আমরা চাইব, আগামীদিনে এমন কোনও ঘটনা কারও নজরে এলে তাঁরা যেন দ্রুত পুলিশকে খবর দেন। সেক্ষেত্রে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে এমন ঘটনা রুখবে।’’ এ দিন বিকেলে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ধরে আলিপুরদুয়ার ছাড়েন ওই মহিলা। যাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘আমি ভিক্ষে করতে করতে এখানে চলে এসেছিলাম। কেউ হয়তো আমায় ভুল বুঝেছেন।’’